কুলাউড়ায় এম.এ.গণি কলেজ যেন একটা ধ্বংসস্তুপ ; সভাপতির চেয়ারে অশিক্ষিত পাকি খানের ১৬বছর পার
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৩৬:১১,অপরাহ্ন ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ২৩৯৮ বার পঠিত
জাকির হোসেন, সিলেট : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় ইউছুফ-গণি কলেজে(বর্তমানে এম.এ.গণি কলেজ) গত ১৬বছর যাবত এলাকার অশিক্ষিত ও বিতর্কিত চরিত্রের অধিকারী গোলাম সরওয়ার পাকিখানকে সভাপতির চেয়ারে বসিয়ে নজিরবিহীন অনিয়ম ও দূর্ণীতি চালানো হচ্ছে। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সাবেক সভাপতি এ.এন.এম.ইউছুফ কর্তৃক ১৯৯৫সালে প্রতিষ্ঠিত ও বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের সাবেক সাংগটনিক সম্পাদক ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদের একান্ত বদান্যতায় ১৯৯৮সালে এমপিও ভুক্ত ও ভবনপ্রাপ্ত এ কলেজেটি প্রতিষ্টাতার পরিবারের সদস্যদের দখলীপনার কারণে আজ ধ্বংশের দ্বার প্রান্তে উপনীত হয়েছে বলে এলাকায় সর্বত্র অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাবেক সচিব এ.এইচ.মোফাজ্জল করিম কলেজের গভর্ণিংবডির সভাপতি থাকাকালে কলেজে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত শাহআলম সরকার,মমদুদ হোসেন ও দিলিপ চন্দ্র দাসকে নিয়োগকালীন অযোগ্যতা ও জালসনদে চাকুরি গ্রহনের অভিযোগে চাকুরিচ্যুত করা হয় এবং কলেজে গভর্ণিংবডির ২১/০১/২০০৩ তারিখের অনুষ্টিত ৫২নং সভার ২নং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের বেতন ভাতা জানুয়ারী ২০০৩ থেকে বন্ধ করা হয়। কলেজের সভাপতি মোফাজ্জল করিম বৃটেনে হাইকমিশনার নিয়োগ প্রাপ্ত হলে সেই সুযোগে কলেজ প্রতিষ্টাতার ছেলে খালেদ লাকি, জামাতা শাহআলম সরকার, ভাতিজা এ.এন.এম.আলম, মমদুদ হোসেন মিলে তাদেরই পারিবারিক আত্মীয় কলেজের পাশ্বর্বতী দাউদপুর গ্রামের কোন রকমে স্বাক্ষরতা জ্ঞান সম্পন্ন পাকি খানকে ২০০৪ এর জানুয়ারী মাসে কলেজের সভাপতি পদে বসিয়ে দেয়। সেই থেকে পাকি খানের যাত্রা শুরু করে প্রায় ১৬বছর যাবত তিনি এম এ গণি কলেজের সভাপতি পদে আসীন রয়েছেন।
এ দীর্ঘ সময়ে কলেজে শত শত অনিয়ম দূর্ণীতি সংঘটিত হয়েছে এবং তা এখনো অব্যাহত আছে। অর্থের মাধ্যমে অবৈধ নিয়োগ, কলেজের তহবিল শুন্য করে অর্থ আত্মসাৎ, ভর্তি বাণিজ্য, তাদের ব্যক্তিগত মামলায় কলেজের অর্থ ব্যবহার, অন্যায় ভাবে কলেজের সৎ ও যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষকদের চাকুরিচ্যুত করা, ভুমিদস্যুপনা, কলেজের ভবনে কেজিস্কুল ব্যবসা চালনা, দূর্ণীতির মাধ্যমে আজ্ঞাবহ ও তাদের নিজস্ব পারিবারিক লোকদের নিয়ে প্রতিবার গভর্ণিংবডি গঠনসহ শত শত অপরাধে জড়িয়ে আছে কলেজেটি। এক কথায় দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কলেজের আজ্ঞাবহ গভর্ণিংবডিকে ব্যবহার করে দুর্ধর্ষ অপরাধে জড়িয়ে আছে কলেজটি।
কলেজের শিক্ষক মমদুদ হোসেন ব্রাহ্মনবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েও কলেজে কোন প্রকার ডিউটি না করে অবৈধ ভাবে বেতন ভাতা উত্তোলন করে চলেছেন মাসের পর মাস। কলেজে প্রতিষ্টাতার ভাতিজা এ.এন.এম.আলম ও মমদুদ হোসেন প্রতি মাসে বেতন বিল তৈরী করা কালে একদিন কলেজে উপস্থিত হয়ে হাজিরা খাতায় সারা মাসের অনুপস্থিতির স্বাক্ষর এক সাথে প্রদান করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের একজন শিক্ষক বলেন, “কলেজের সভাপতি পাকিখান অশুস্থ থাকায় প্রায় ৬মাস ঢাকা হতে এলাকায় আসেননি। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহআলম সরকার প্রতি মাসে বেতন বিলে পাকি খানের জাল স্বাক্ষর দিয়ে বেতন বিল জমা করে বেতন উত্তোলন করেন। কোন অনিয়ম বিষয়ে কথা বললে আব্দুন নুর স্যার কিংবা মোতাহের স্যারের মতো বহিষ্কার করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয় বিধায় কেউ ভয়ে মুখ খুলছেনা।”
কলেজের একজন ছাত্র অভিবাবক আব্দুল গফুর বলেন, এম.এ.গণি কলেজ এখন আর কলেজ নেই। এখানে চলছে এক পরিবারের দৌরাত্ব। যার প্রভাব পড়ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর এবং কলেজের পরীক্ষার্থীরা প্রতি বছর খুবই বাজে ফলাফল করছে। বর্তমানে এই কলেজে কোন ভালো শিক্ষার্থী ভর্তি হতেই চায়না।