`যুগান্তকারী ইতিহাস সৃষ্টির পথে কুলাউড়া পৌরসভা’ – কাউন্সিলর ইকবাল আহমদ শামীম
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:৫১:৫২,অপরাহ্ন ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৩৩১৬ বার পঠিত
স্টাফ রিপোর্টার : ১১.২৫ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়ে কুলাউড়া পৌরসভার যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৯৬সালের ২৬ডিসেম্বর। বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের সাবেক সাংগটনিক সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি তৎকালীন সাংসদ সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদের আন্তরিক প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েই কুলাউড়া পৌরসভার জন্ম। ‘গ’ শ্রেনী নিয়ে পৌরসভার যাত্রা শুরু হলেও ঐ সুলতান মনসুরই অল্পদিনের ভিতর ২০ মে ২০০১ তারিখে পৌরসভাকে ‘খ’শ্রেণীতে উন্নীত করেন। আর বর্তমান মেয়র আলহাজ¦ শফি আলম ইউনুস ১ম মেয়র নির্বাচিত হওয়ার মাত্র ২বছরের মধ্যেই তাঁরই বলিষ্ট নেতৃত্ব ও প্রচেষ্টায় ২ফেব্রুয়ারী ২০১৭ তারিখে পৌরসভা ‘ক’শ্রেণীতে উন্নীত হয়। সুদীর্ঘ ২৩ বছরের জীবনে পৌরসভার সাফল্য, প্রত্যাশা, প্রাপ্তি, ব্যর্থতা সকল বিষয় নিয়ে ঊষারবাণীর মুখোমুখি হন কুলাউড়া পৌরসভার অত্যন্ত বলিষ্ট কাউন্সিলর ইকবাল আহমদ শামীম। যিনি কুলাউড়া পৌরসভার প্রথম নির্বাচন থেকে শুরু করে আজোবধি ৪বার বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
একজন জন প্রতিনিধির আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা থাকলেই কেবল প্রতিবার নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারে। টানা ২১বছর থেকে কুলাউড়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের ভোটারদের মেন্ডেট নিয়ে নির্বাচিত কাউন্সিলর ইকবাল আহমদ শামীম কে তার দায়িত্বকালীন দীর্ঘ সময়ের মূল্যায়ন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৫এপ্রিল ১৯৯৯সালে তিনি পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। শুরুতে পৌরসভার রাস্তা ঘাট, বিদ্যুত ব্যবস্থা, পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বা ড্রেনেজ ব্যবস্থা সহ সামগ্রিক অবকাঠামো চরম দুরবস্থায় ছিলো। বিশেষ করে ৮নং ওয়ার্ডকে কোন পৌরসভা ভুক্ত এলাকাতো দূরের কথা, শতাব্দি ধরে উন্নয়নের স্পর্শ বঞ্চিত কোন এক অজোপাড়া মনে হতো। তার দায়িত্ব কালে কুলাউড়া পৌরসভা বিশেষ করে ৮নং ওয়ার্ডের উন্নয়নে এক বিপ্লব সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তা ঘাটের উন্নয় হয়েছে শতভাগ, বিদ্যুত ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন, কালভার্ট , শিক্ষা, ক্রীড়া সহ সকল ক্ষেত্রের উন্নয়নে তিনি ভোটরদের তথা ৮নং ওয়ার্ডের আপামর জনতার প্রত্যাশা পুরণে সক্ষম হয়েছেন।
কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র আলহাজ¦ শফি আলম ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান পরিষদের সাড়ে তিন বছরে ৮নং ওয়ার্ডের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কাউন্সিলর ইকবাল আহমদ শামীম বলেন, “বিগত মেয়রের (কামাল আহমদ জুনেদ) ১২বছরের অধিক সময়েও আমি কাউন্সিলর ছিলাম, আর আল্লাহর রহমতে বর্তমান মেয়রের পরিষদেও আমি কাউন্সিলর আছি। সংক্ষেপে এটুকু বলব যে, বিগত মেয়রের ১২বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে বর্তমান মেয়রের সাড়ে তিন বছরে তার চাইতে দ্বিগুনেরও বেশী উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে।”
গত পৌরসভা নির্বাচনে জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতির কত ভাগ পূরণ করে সক্ষম হয়েছেন ? এমন প্রশ্নের জবাবে কাউন্সিলর শামীম বলেন, “হ্যা,আমার নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের দেয়া প্রতিশ্রুতির কমপক্ষে ৮০ ভাগ এই সাড়ে তিন বছরে আমি পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। ইনশাল্লাহ বাকী দেড় বছরে জনগণের প্রত্যাশার শতভাগের চেয়েও বেশী কাজ বাস্তবায়ন হবে। ” তিনি তার উন্নয়ন মূলক কাজের বিবরণ দিতে বলেন যে ইতিমধ্যে তিনি চাতলগাঁও, বাদে-মনসুর, উছলাপাড়া, কাছুর কাপন সহ সকল রাস্তারই কাজ প্রায় শেষ করেছেন। এমনকি অধিকাংশ বাসা-বাড়ী পর্যন্ত রাস্তাও করে দিয়েছেন। ড্রেনেজ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। অন্তত তার ওয়ার্ড সহ গোটা পৌরসভায় কোন গরীব তার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেনা। ভিজিটি, ভিজিএফ, বিধ্বা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা সহ সকল নাগরিক সুবিধা সমুহ উপযুক্ত ব্যক্তিদের নিকট বন্টিত হচ্ছে। অন্তত এসকল বিষয়ে পুরো পৌরসভায় একটিও অভিযোগ নেই। চাঁদাবাজী হচ্ছেনা, মাদক ব্যবহারও ক্রয় বিক্রয় বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করা হয়েছে। জনগনকে মামলার হয়রানি হতে আমরা পুরোপুরি মুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছি। সর্বোপরি আমার নির্বচনী এলাকা কুলাউড়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের জনগণের মধ্যে একটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় আছে।আমি আশা করছি এ সম্প্রীতির বন্ধন ভবিষ্যতেও অটুট থাকবে। আর বর্তমানে পৌরসভায় যে ভাবে উন্নয়ন অব্যাহ আছে ,আমি মনে করি কুলাউড়া পৌরসভা যুগান্তকারী ইতিহাস সৃষ্টির পথেই এগুচ্ছে।
সম্প্রতি দেশব্যাপি ডেঙ্গু মশার কারণে সৃষ্ঠ মহামারিতে কুলাউড়া পৌরসভার গৃহিত পদক্ষেপ বিষয়ে জানতে চাওয় হলে কাউন্সিলর ইকবাল আহমদ শামীম বলেন, যদিও কুলাউড়া পৌরসভা এলাকায় ডেঙ্গু /এডিস মশার অস্থিত্বের কোন প্রমাণ আমাদের কাছে ছিলনা তথাপিও আমার পৌরসভার প্রত্যেকটি এলাকায় নিয়মিত সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মশার ঔষধ প্রয়োগ করেছি। জনগণকে ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতন করার লক্ষ্যে স্থানীয় ভাবে প্রচার প্রচারনা চালিয়েছি। কুলাউড়া পৌরসভা এলাকায় কোন লোকই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়নি। তবে বাইরে থেকে কুলাউড়া এলাকার যে কয়জন লোক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন তাদের চিকিৎসা বিষয়ে আমরা সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর রেখেছি এবং এদের সকলেই শুস্থ হয়েছেন।
কোন কোন ক্ষেত্রে এখনো সফলকাম হকে পারেনি ? এমন প্রশ্নের জবাবে কাউন্সিলর শামীম বলেন.“এখনো পৌরসভায় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারিনি। আমাদের বর্তমান মেয়র মহোদয় এর নেতৃত্বে আমরা দীর্ঘদিন যাবত কুলাউড়া পৌরবাসীকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রায় ৮০কুটিরও অধিক অর্থ ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। শীঘ্রই এ ব্যাপরে একটি সুখবর দিতে পারব আশা করছি। আর ড্রেনেজ ব্যবস্থা বিষয়ে এখনো কিছু কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। আশা করছি আগামী ১বছরের মধ্যে ড্রেনেজ সমস্যার ও সমাধান হয়ে যাবে। ”
পৌরসভা এ গ্রেডে উন্নীত হওয়ার কারণে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপশি সাধারণ জনগণের করের বুঝাও বৃদ্ধি পেয়েছে বলছেন কেউ কেউ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর শামীম বলেন, ‘যারে দেখতে নারী তার চলন বাকা’ কেউ যদি মনের ভীতরে হিংসাকে লালন করে তবে কোন ভালো কাজই তার মন গলাতে পারেনা। সে খারাফ খুঁজতেই থাকবে। একজন লোকের পক্ষে শতভাগ লোককে খুশি করা সম্ভব নয়। তবে এটুকু বলব, কুলাউড়া পৌরসভা এ গ্রেডে উন্নীত হওয়ার কারণে সাধারন জনগণের করের বুঝা ১টি টাকাও বৃদ্ধি পায়নি। বরং পৌর মেয়র আলহাজ¦ শফি আলম ইউনুস তার নির্বাচন কালীন ওয়াদা অনুযায়ী যাদের পৌরকর ১০০/১৫০ টাকা এধরনের সবার টেক্স তিনি ব্যক্তিগত ভাবে পরিশোধ করে যাচ্ছেন । শুধু তাই নয়, পৌর এলাকার সকল মুক্তি যুদ্ধা পরিবারের সকল পৌরকর তিনি ব্যক্তিগত ভাবে পরিশোধ করে যাচ্ছেন। তাই এ গ্রেডে উন্নীত হবার কারনে পৌরকর বৃদ্ধি এটা নিছক অপপ্রচার বৈ আর কিছু নয়।
ভবিষ্যতে আবারও নির্বাচন করার কোন পরিকল্পনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে লাগাতার ৫বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ইকবাল আহমদ শামীম বলেন, আল্লাহ যদি শুস্থ রাখেন এবং আমার এলাকার ভোটারদের ভালবাসা ও আগ্রহ থাকলে আগামী নির্বাচনেও কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার ইচ্ছা রয়েছে। কাউন্সিলর শামীম আরো বলেন, আগামী নির্বাচনে নয় তবে , ভবিষ্যতে পরবর্তী কোন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করার স্বপ্নও রয়েছে তার।
বর্তমান মেয়র আলহাজ¦ শফিআলম ইউনুছ এর সাথে কাজ করতে আপনাদের কেমন লাগছে ? উত্তরে কাউন্সিলর ইকবাল আহমদ শামীম বলেন, এক কথায় অসাধারণ ! নির্বাচনে তিনি ভোটারদের প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন, পৌরসভার অর্থব্যয়ে এক গøাস জল ও তিনি স্পর্শ করবেননা। তিনি তাঁর কথা রেখেছেন। মাস শেষে যে সম্মানীটুকু পান তাও তিনি গরীবদের মধ্যে অকাতরে বিলিয়ে দেন। পৌরসভার কর্মকর্তা, কর্মচারী সকলেই তিনির আচরণে মুগ্ধ, সততায় এক উজ¦ল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মেয়র শফি আলম ইউনুছ।