কুলাউড়ার ভাটেরায় কলিমাবাদ রাস্তাটি স্বাধীনতার ৪৮বছরেও উন্নয়ন বঞ্চিত !
প্রকাশিত হয়েছে : ১:১০:২৫,অপরাহ্ন ১৭ নভেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৮৭৬ বার পঠিত
স্টাফ রিপোর্টার : স্বাধীনতার ৪৮ বছর পেরিয়ে গেলেও মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ ‘ভাটেরা বাজার-কলিমাবাদ-ভাটেরা রাবার বাগান’ রাস্তাটি উন্নয়নের নুন্যতম ছোয়া পর্যন্ত পায়নি। অবস্থাদৃশ্যে মনেহয় কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের কলিমাবাদ গ্রামের অধিবাসী ও উল্লেখিত রাস্তাটি স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্রেরই বাহিরে অবস্থিত। রাস্তাটি ব্যবহার করে কমপক্ষে অর্ধশত বছর যাবত সুবিধা নিচ্ছে ভাটেরা,বরমচাল ও ভূকশিমইল ইউনিয়নের ১লক্ষ মানুষ। ভাটেরা ইউনিয়নের ৩৩টি গ্রামের শতভাগ মানুষই নানা প্রয়োজনে এ রাস্তা ব্যবহার করলেও শুধুমাত্র কলিমাবাদ গ্রামের অসহায় লোক গুলোই নিজেদের প্রয়োজনের তাগিদে সময়ে সময়ে স্বেচ্ছা শ্রমের মাধ্যমে রাস্তাটি মেরামত করে কোন রকমে চলাচলের উপযোগী করার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে যুগযুগ ধরে।
এলাকাবাসী থেকে জানা যায়, ব্রাহ্মনবাজার হতে ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের সংযোগ সড়ক ভাটেরা বাজার হতে পশ্চিম মুখি কলিমাবাদ হয়ে ভাটেরা রাবার বাগান পর্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি প্রায় অর্ধশত বছর যাবত সকল ধরনের সরকারী ও বেসরকারী উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত। রাস্তাটির পাশ ঘেষে ঘাগরা ছড়া প্রবাহিত হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই শক্তিশালী পাহাড়ী ঢল রাস্তা ভেঙ্গে লন্ডভন্ড করে দেয়। তাছাড়া বৈধ ও অবৈধ উপায়ে এলাকার প্রভাবশালী কর্তৃক ঘাগরা ছড়ার বালু উত্তোলন করে বালু ভর্তি ট্রাক দিয়ে ভঙ্গুর কাঁচা রাস্তাটিকে প্রতিনিয়ত বড় বড় গর্ত সৃষ্টি করে চলাচলের চরম অযোগ্য করা হয়, বর্ষার সময় রাস্তাটি হাটু পর্যন্ত কাদাময় থাকে। ভুক্তভোগী এলাকার লোকজন বাধা দিলেও তা পাত্তাই দেয়না তথাকথিত সুবিধাভোগীরা।
ঘাগরা ছড়ার বালু দিয়ে কুলাউড়া সহ মৌলবীবাজারের বিভিন্ন এলাকার বড় বড় রাস্তাঘাট-দালান তৈরী হলেও এখানে কেউ রাস্তায় একমুষ্টি বালু ফেলে রাস্তাটি সামান্যতম ভাল থাকুক সে চেষ্ঠাও করেনা। পরিতাপের বিষয়, ঘাঘরা ছড়ার পাশ ঘেষে চলা কলিমাবাদ রাস্তাটির কোন উন্নয়ন হয়নি অথচ এই এলাকার বালু-পাথর দিয়ে ইউনিয়নের ৮০ভাগ রাস্তা,ব্রীজ, কালভার্ট ও বিল্ডিং নির্মান হয়েছে ,এখনো হচ্ছে।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে ভাটেরা ইউনিয়নের সাবেক জনৈক জনপ্রতিনিধি বলেন, অতীতে বারবার এই রাস্তার নামের বরাদ্দ দ্বারা অন্যত্র কাজ করানো হয়েছে। সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ মিয়ার সময়ে দু’বার এই রাস্তার বরাদ্দ এসেছিল। তিনি তখন ইউনিয়ন বিএনপিরও সভাপতি ছিলেন। দলীয় প্রভাব ও চেয়ারম্যান এর ক্ষমতা ব্যবহার করে তিনি কলিমাবাদ রাস্তার বরাদ্দ দ্বারা অন্যত্র কাজ করিয়েছেন। তাছাড়া আওয়ামিলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার পরেও বিগত সময়ে সকল সরকারী বরাদ্দ নতুন অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ন্ত্রনে ছিল তাই এই এলাকা বঞ্চিত রয়ে গেছে।
এ বিষয়ে ভাটেরা কলিমাবাদ গ্রামের বাসিন্দা বর্ষিয়ান মৌলানা মুহিবুর রহমান বলেন, তার ৮০বছরের জীবনে এই রাস্তায় কখনো কোন সরকারী কাজ হতে দেখেননি। তবে এই রাস্তার নামে মঞ্জুর হওয়া অনেক সরকারী বরাদ্দ জনপ্রনিধিগণ কর্তৃক বিভিন্ন সময় আত্মসাত হয়েছে কিংবা অন্যত্র নিয়ে কাজ করানো হয়েছে।
ইসলামনগর গ্রামের বাসিন্দা হাজী কমরউদ্দিন বলেন, বারবার এ রাস্তাটির নামে সরকারি বরাদ্দকে অশুভ কালো হাতের থাবায় অন্যত্র সরে গেছে বিধায় কখনো এ রাস্তাটির কাজ হয়নি এবং কোন দিন হবে বলেও এখনো সম্ভাবনা দেখছিনা।
ভাটেরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলাম বলেন, “স্বীকার করছি,অতীতে কখনোই কলিমাবাদ রাস্তায় বড় ধরনের কোন উন্নয়ন হয়নি, তবে আমার মেয়াদে বিভিন্ন সময়ে রাস্তাটির ভাঙ্গন রোধে আমি কিছু কিছু জায়গায় কাজ করিয়েছি। রাস্তাটি ভাটেরা ইউনিয়নের অতি জন গুরুত্বপূর্ণ বিধায় আরো আগেই এটির কাজ করানো উচিত ছিল। আমার চেষ্ঠা অব্যাহত আছে, আশা করি খুব শীঘ্রই এই রাস্তার বিষয়ে একটি সুখবর দিতে পারব।”