সুপ্রীমকোর্ট বার কাউন্সিল নির্বাচনে ‘আমিন উদ্দিন’ সভাপতি পদে পুণ:নির্বাচিত, কুলাউড়ায় আনন্দের বন্যা !
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:১১:০৬,অপরাহ্ন ১৩ মার্চ ২০২০ | সংবাদটি ১২৮৮ বার পঠিত
মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন, ঊষারবাণী ডেস্ক : ভাটি বাংলার গর্বের সন্তান, হাকালুকি হাওর পারে তমাল,হিজল,কড়চ ও বরুনের বানানী ছায়া সুনিবিড় শালুক-শিঙ্গাই খুঁজে শৈশব ও কৈশোর পার করা আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন(এ.এম.আমিন উদ্দিন) বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবি সমিতির নির্বাচনে আওয়ামিলীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে টানা ২য় বারের মতো সুপ্রীমকোর্ট বারে সভাপতি নির্বাচিত হলেন। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষনা হওয়ামাত্রই তার নিজ এলাকা মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সর্বস্তরের মাঝে বইছে আনন্দের বন্যা। দল মত নির্বিশেষে তাঁর এ বিজয়কে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ জনতা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কুলাউড়া কৃতি সন্তান আমিন উদ্দিনের বিজয় শুধু কুলাউড়ার নয় পুরো সিলেটের জন্য অত্যন্ত গৌরবের।
উল্লেখ্য ১১ ও ১২ মার্চ অনুষ্টিত বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট বার কাউন্সিল নির্বাচনে আমিন উদ্দিন তার নিকটতম প্রতিদ্ধন্ধী জয়নুল আবেদীনের চেয়ে ৯১৩ ভোট বেশী পেয়ে সভাপতি পদে পুননির্বাচিত নির্বাচিত হন। নির্বাচনে এডভোকেট আমিন উদ্দিনের প্রাপ্ত ভোট ৩৩৭০। নির্বাচনে আওয়ামিলীগ সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামি আইনজীবি সমন্বয় পরিষদ (সাদা প্যানেল) সভাপতি সহ ৬টি পদে এবং বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ঐক্য প্যানেলে (নীল প্যানেল) সম্পাদক পদে মোঃ রুহুল কুদ্দুস কাজল সহ ৮টি পদে জয়লাভ করেন।
আমিন উদ্দিনের বর্ণাঢ্য জীবন : এডভোকেট আমিন উদ্দিন ১৯৬০ সালে বৃহত্তর সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের ‘বাদে ভূকশিমইল’ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত ও উচ্চশিক্ষিত পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। বাবা এম.এ.গণি ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের ডেপুটি রেজিষ্ট্রার। সজ্জন ও পরোপকারী ব্যক্তি হিসেবে তিনি সর্বমহলে অত্যন্ত পরিচিত ছিলেন। এডভোকেট আমিন উদ্দিনের মা মরিয়ম বেগম ছিলেন পুরোদস্তুর একজন গৃহিনী ও শিক্ষানুরাগী।
কুলাউড়ার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের গোবিন্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়েই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। পরে তিনি পিতার কর্মস্থল ঢাকার ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুলে ভর্তি হোন এবং অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে ১৯৭৮ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হোন। পরে ‘ঢাকা কলেজ’ থেকে গ্র্যাজুয়েশন এবং ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ল কলেজ’ হতে এল.এল.বি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা জগন্নাত কলেজ হতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এর পরপরই তিনি নিজেকে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টে আইন পেশায় নিযুক্ত করেন। পেশার প্রতি প্রচন্ড আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার ফলে ক্রমান্বয়ে তার সফলতা আসতে থাকে। আদালত পাড়ায় তাঁর সততায় মুগ্ধ হয়ে বিচারপতি ও আইনজীবি সহ সবার কাছে তিনি অত্যন্ত প্রিয় হয়ে উঠেন। প্রধান বিচারপতির নিকট হতে গ্রহন করেন সিনিয়ন আইনজীবির সম্মান সূচক খেতাব।
১৯৯৬ সালে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের ‘ডেপুটি এটর্ণি জেনারেল’ নিযুক্ত হোন। ২০০৬-০৭ মেয়াদে তিনি সুপ্রীমকোর্ট বার কাউন্সিল নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হোন। ২০১৯-২০ তিনি সর্ব প্রথম সিলেটি আইনজীবি হিসেবে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট বার কাউন্সিলের সভাপতি নির্বাচিত হোন। ২০২০-২১ মেয়াদেও সৎ,পরিচ্চন্ন কর্মতৎপর ও আদালত পাড়ায় সার্বিক উন্নয়নের আস্থার প্রতিক হিসেবে বিবেচি আমিন উদ্দিন আবারো সভাপতি নির্বাচিত হলেন।
সুপ্রীমকোর্ট বার কাউন্সিলের সভাপতি এডভোকেট আমিন উদ্দিনের স্ত্রী ‘আফসারী আমিন শিবলী’ একজন শিক্ষানুরাগী ও সমাজকর্মী। রায়হান আমিন ও নাহিয়ান আমিন নামে তাদের দুই পুত্র সন্তান রয়েছে।
আমিন উদ্দিনের সহোদর ভাই আবু মোহাম্মদ বদর উদ্দিন,আবু মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, বোন হাসনা বেগম, চাচাতো ভাই আফতাব উদ্দিন ও ভাতিজা অধ্যাপক মোহাম্মদ মোতাহের হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তারা এ বিজয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।