ভাটেরায় অকুতোভয় কলিমাবাদ গ্রামবাসীর ব্যতিক্রমি উদ্যোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:২৬:২০,অপরাহ্ন ১৩ জুলাই ২০২০ | সংবাদটি ১৮৪৪ বার পঠিত
মাশরুর ফারহান তাহসিন, ভাটেরা কলিমাবাদ থেকে : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের সর্বপ্রাচীন গ্রাম কলিমাবাদ, যে এলাকাটি যুগযুগ ধরে রাষ্ট্রীয় সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে ক্যালকুটেড অবহেলার স্বীকার। কিন্তু কখনোই যে গ্রামের মানুষ থেমে থাকেনি সরকারী সুবিধার প্রত্যাশায়। তাঁরা নিজেরাই নিজেদের জন্য যথেষ্ট। যুগযুগ ধরে জনসেবার মিথ্যা প্রত্যয়ে যে গ্রামের মানুষের কাছে ভিক্ষার হাত পেতেছেন বহু বহু জনসেবক, কিন্তু কেউ কথা রাখেনি। বরং উক্ত রাস্তার নামে আসা বরাদ্দ দিয়ে বার বারই দূর্ণীতির মাধ্যমে অন্যত্র কাজ করানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ ও স্থানীয় সরকারের গ্যাজেট মোতাবেক কলিমাবাদ গ্রামের একমাত্র গ্যাজেটভুক্ত রাস্তা হলো ভাটেরা বাজার হতে পশ্চিমমুখী ঘাঘরা ছড়ার পার্শ্ব ঘেষে প্রবাহিত ভাটেরা রাবার বাগানের সর্ব উত্তর সীমান্ত দিয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ বিআইডিসি পর্যন্ত। কালের পরিক্রমায় রাস্তাটির রাবারবাগান পরবর্তী অংশ আজ বিলুপ্ত। সরকারী তথ্য মতে এই রাস্তাটি পাকাকরনের জন্য ৩বার সরকারী বরাদ্দ মঞ্জুর হলেও কাজ হয়েছে অন্যত্র। সর্বশেষ কলিমাবাদ গ্রামের বরাদ্দ দিয়ে ভাটেরা দক্ষিণভাগ মাদ্রাসা হতে রাবার বাগান পর্যন্ত বাগানের ব্যক্তিগত রাস্তাটি কলিমাবাদ রাস্তা নাম দিয়ে পাকাকরণ হয়েছে, যা ভাটেরা ইউনিয়ন জনপ্রতিনিধি গণ ঠান্ডা মাথায় দুর্ণীতির মাধ্যমে সেটি করেছেন।
সরেজমিনে কলিমাবাদ গ্রামের ভৃুক্তভূগী অধিবাসীগণ জানান, এই গ্রামের কাছে পূরো ভাটেরাবাসী আজীবন কৃতজ্ঞ থাকা উচিত, এই গ্রামের ঘাঘরা ছড়ার বালু দিয়ে ইউনিয়নের প্রতিটি বাড়ীর দালান নির্মিত হয়েছে, এই রাস্তা দিয়ে এলাকার মানুষের পাহাড়ী কাঠ পরিবহন, গবাদি পশু প্রতিপালন সহ রাস্তাটি ব্যবহার করতে হয়নি এমন মানুষ পুরো ভাটেরা ইউনিয়নে নেই। কিন্তু সরকারী সুবিধা বঞ্চিত থাকা যেন তাদের ভাগ্যে পরিনত হয়ে গেছে।
জানা যায়, ভাটেরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বেশীরভাগ মানুষই চান ইউনিয়নের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কলিমাবাদ রাস্তাটি যেন দ্রুততম সময়ে পাকাকরণ হয়। কিন্তু সকল সময়েই ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের সদিচ্ছার অভাবই রাস্তাটির বর্তমান পরিনতির জন্য দায়ী বলে মনে করেন ইউনিয়নের সচেতন জনগন।
এত কিছুর পরেও দমে নেই কলিমাবাদ গ্রামের অকুতোভয় ও নির্ভিক অধিবাসীগণ। তারা বরাবরের ন্যায় স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে কয়দিন থেকে রাস্তাটির অতিভঙ্গুর অবস্থা থেকে চলাচলের উপযোগী করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। দেশে বিদেশে অবস্থানরত কলিমাবাদ গ্রামের অধিবাসীগণ তাদের মানবিক সহায়তার হাত প্রসারিত করেছেন রাস্তাটির উন্নয়নের স্বার্থে। আর এজন্য প্রচারণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে কলিমাবাদ গ্রামের উদ্যমী তরুণদের মাধ্যমে পরিচালিত “রাস্তা সংস্কার চাই, আওয়াজ চাই, সহযোগিতা চাই” নামক ফেসবুক গ্রুপ। এছাড়াও সাংগটনিক ভাবে ভাটেরা ফ্লাওয়ার স্পর্টিং ক্লাবের সদস্যগণ ও রাস্তার সংস্কারে স্বেচ্ছা শ্রমের মাধ্যমে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
ভাটেরা বাজার হতে পশ্চিম মুখী কালমাবাদ রাস্তার সংস্কারে আর্থিক ভাবে সবচেয়ে বেশী অবদান হলো আব্দুল হান্নান সিদ্দিকীর পরিবারের সদস্য বৃন্দ বিশেষ করে কানাডা প্রবাসী আব্দুস ছালাম সিদ্দেকী, ফ্রান্স প্রবাসী হাসান সিদ্দেকীর নাম উল্লেখ যোগ্য।
রাস্তার কাজের নেতৃত্বে রয়েছেন, ভাটেরা বাজার বনিক সমিতির সভাপতি হোসেন আহমদ, আব্দুল হান্নান সিদ্দেকী, মুমিনআহমদ ও মোঃ রাহাত(মঈন )। এছাড়া প্রচারনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন দুবাই প্রবাসী রিয়াজ আহমদ।
কলিমাবাদ গ্রামের রাস্তাটির সংস্কার ও মেরামতের জন্য এপর্যন্ত দেশে ও প্রবাসে যারা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে ও শ্রম দিয়ে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তাদের অন্যতম হলেন, মৌলানা মুহিবুর রহমান, হাজী কমরুদ্দিন, আওলাদ হোসেন পংকি, শামীম আহমদ(পরিচালক, মাউন্ট এডোরা হাসপাতাল),মোঃ কফিল উদ্দিন, আব্দুল বাতেন,শাহীন আহমদ(মুমিন আহমদের ভাই),জামাল হোসেন (মোঃ রাহাত/মঈন এর ভাই) ,তানভির আহমদ মঈন ,আহমেদ শিব্বির, আব্দুস সামাদ আজাদ, নিসার আহমদ, আজাদ আল মামুন, গিয়াশ উদ্দিন(ভটেরা কৃষকলীগ সভাপতি) মাসুদ রানা হেলাল(যুক্তরাজ্য প্রবাসী), শেখ আকমল হোসেন(সভাপতি, ষ্টেশনবাজার বানক সমিতি), আতির আহমদ তালুকদার, তোতা মিয়া, তাামিম আহমদ, রেদোয়ান আহমদ, ফুল মিয়া, রাসেল আহমদ, আবুল খায়ের, শাহিন আহমদ(দুবাই প্রবাসী রিয়াজ আহমদের ভাই) জালাল আহমেদ, রাজু আহমেদ,আহমেদ রিয়াদ.দিপু আহমেদ, মোঃ আশরাফুল, হারুন মিয়া, শাহ ইমন, শাহ সাইফুল, মোঃ রুজেল, আলম, শাহরিয়ার জাহাঙ্গীর, জিসান আল মামুন, জুনেদ আহমদ, মুসা মিয়া,মুরছালিন আহমদ, আবুল বাশার, ফাহিম হোসেন,মোঃ ফটিক মিয়া, , নাজিম উদ্দিন,সাইফুল ইসলাম, মোঃ কামরুল হোসেন, মোঃ সুলতান আহমদ, কামরুজ্জাসান আলআমিন, বাছির আহমদ, রুয়েল মিয়া, নিরব হাসান, রবিন তালুকদার, তাজুল আহমদ, নোমান খান, সেফুল মিয়া, শাহ রুমেল আহমেদ, সজিব হোসেন, প্রমুখ।