মুজিবুর রহমান (৪৫) পেশায় সিএনজি স্ট্যান্ড ম্যানেজার। সামান্য আয়-রোজগারে কোনমতে চলত দরিদ্র মুজিবুর রহমানের সংসার। তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তিনি কোন মতে দিনপাত করতেন। দ্বিতীয় মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত থাকায় বিয়ে দেওয়ার চিন্তায় তিনি অনেকটাই বিষন্ন থাকতেন।
দরিদ্র মুজিবুর রহমানের পক্ষে যেখানে পরিবারের ভরণপোষণ অনেকটা কষ্টকর সেখানে বিবাগযোগ্যা মেয়েকে বিয়ে দেয়ার চিন্তা দুঃস্বপ্নের মতো। মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে মুজিবুর রহমান অনেকের কাছে সাহায্য সহযোগিতা চান।সকলের সহযোগিতার আশ্বাস পেয়ে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেন তিনি কিন্তু স্রষ্টার অমোঘ বিধানে মেয়ের বিয়ে আগেই তিনি চলে গেলেন পরপারে। পিতার মৃত্যুর পর অসহায় দরিদ্র মুজিবুর রহমানের মেয়ের বিয়ে অনেকটাই অনিশ্চয়তাযর মধ্যে পড়ে যায়।
সদ্য মারা যওেয়া দরিদ্র সিএনজি স্ট্যান্ড ম্যানেজার মুজিবুর রহমানের মেয়ের বিয়ের অসহায়ত্ব সম্পর্কে খবর পান মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি, এলাকার দানবির তাজুল ইসলাম তারা মিয়া মাষ্টার। তিনি খবর পাওয়ার সাথে সাথে অসহায় দরিদ্র মেয়েটির বাড়িতে যান। পরিবারে খোঁজ খবর নেন। সবকিছু জেনে বাড়িয়ে দেন মানবতার হাত। আশ্বাস দেন বিয়েসহ মেয়েটির আগামীর সকল দায়িত্ব নেওয়ার।
যেই কথা সেই কাজ। মৃত মুজিবুর রহমানের মেয়ে শোভা বেগম (১৯) এর বিয়ের কেনাকাটা সহ যাবতীয় কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেন তিনি।অবশেষে ২৫ অক্টোবর বিয়ের সকল কাজ সম্পন্ন করেন তাজুল ইসলাম তারা মিয়া। এ যেন মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাজুল ইসলাম তারা মিয়ার ও মহানুভবতা পুরো মৌলভীবাজার জেলায় প্রশংসিত হয়েছে।
তাজুল ইসলাম তারা মিয়া মানবতার তরে কাজ করে যাচ্ছেন সব সময়। করোনা ভাইরাসের মহামারীতে ও তিনি থেমে থাকেননি। করোনা ভাইরাসে যখন দরিদ্র অসহায় মানুষ বিপর্যস্ত ছিল তখন তিনি উপজেলার প্রায় ৩০০ টি পরিবারকে চার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। রমজান মাসে যখন খেটে খাওয়া মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় খাবার জোগান দেওয়া ছিল প্রায় অসম্ভব ছিল তখন তিনি ইফতারি নিয়ে পাশে থেকেছেন দরিদ্র মানুষের। উপজেলার যেখানেই অসহায় মানুষের খবর পেয়েছেন সেখানেই মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাস বলেন, মানবতার তরে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম তারা মিয়া স্যার। পিতৃহারা অসহায় শোভা বেগমের বিয়ের দায়িত্ব নিয়ে তিনি যে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
জুড়ী উপজেলা দূর্ণীতি প্রতরোধ কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম তারা মিয়া মাষ্টার ভূপেন হাজারিকার বিখ্যাত গানের কলি আওড়িয়ে বলেন, মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভুতি মানুষ কি পেতে পারেনা ? যতদিন বাঁচব এভাবেই মানবতার জন্য মানুষের জন্য নিজ অবস্থান তেকে কাজ করার চেষ্ঠা কের যাব।। অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে আমি আনন্দ পাই। সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকেই অসহায় মেয়েটির বিয়ের ব্যবস্থা করেছি।