জুড়ীতে অকেজো পড়ে আছে কোটি টাকার স্লুইছ গেট
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৪১:৪৭,অপরাহ্ন ১৫ নভেম্বর ২০২০ | সংবাদটি ৩৮৯ বার পঠিত
জুড়ী প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের জুুড়ীতে কোটির অধিক টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্লুইছ গেট কৃষকের কোন কাজে না আসায় প্রায় ৫ বছর থেকে অকেজো পড়ে আছে। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট সমবায় সমিতি নিয়েও বিস্তর অভিযোগ এলাকাবাসীর। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ও সমবায় কর্মকর্তা বরাবরে রোববার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক ২০১২-১৩ অর্থ বছরে ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প (জাইকা)’র অর্থায়নে প্রায় ১.৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ধামাই গ্রামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।
প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ৯ লক্ষ ৬৩ হাজার ২৫৬ টাকা ব্যয়ে কাউলীছড়ায় একটি স্লুইছ গেট (৩ভেন্ট-১৫০মিঃ ২২০মিঃ), খাল খনন, দেড় কিলোমিটার বেড়ি বাঁধ ও পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির কার্যালয় নির্মাণ করা হয়।
প্রকল্পের ভূমি দাতা জহির আলী, স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল আহমদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন, জুলেখা বেগম, রায়না বেগম, কছির আলী, ফাতিমা আক্তার প্রমূখ অভিযোগ করেন, এ এলাকার কৃষকের বোরো আবাদে পানি সেচের সুবিধার্থে স্লুইছ গেট নির্মাণের পর বহু কষ্টে ২/৩ বছর সেটা ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বেড়ি বাঁধে পর্যাপ্ত মাটি না থাকায় জমানোর আগেই বাঁধ অতিক্রম করে পানি চলে যায়। কৃষকরা আগের মত মিশিনের সাহায্যে পানি সেচ দিয়ে জমি চাষ করছেন। আর সরকারের কোটি টাকার স্লুইছ গেট অকেজো পড়ে আছে। সার্বিক বিষয়টি দেখাশুনা ও কৃষকের উন্নয়নের জন্য কাউলীছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি (নিবন্ধন নং সম/মৌল : ৪৩৩, ২৫.৩.১৫) গঠিত হয়। কিন্তু সমিতি গঠনের পর থেকে বলতে গেলে কোন কার্যক্রমই নেই। সাধারণ সদস্যদের কোন কিছু অবগত করা হয়না। গোপনে কমিটি করা হয়। সঞ্চয় ও ঋণ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
সমিতির সম্পাদক ৫ বছর থেকে এলাকায় থাকেন না, তিনি বড়লেখায় একটি বাগানে চাকরী করেন।
নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে সমিতির সদস্যরা বলেন, সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ের উদ্দেশ্য সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন হোক। প্রকাশ্যে সমিতির হিসাব অডিট করা হোক।
জানতে চাইলে কাউলীছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি (পাবসস) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুনিম রাজন বলেন, বিভিন্ন সমস্যার কারনে সঞ্চয় বা শেয়ার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ডিসেম্বরে নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি করা হবে।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, উক্ত সমিতিতে ৮৮জন সদস্য রয়েছেন। সমিতির সদস্য নিজেরা কমিটি করেন। সমঝোতা না হলে নির্বাচন হয়। তবে সমঝোতার মাধ্যমেই গত ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর ১২ সদস্যের কমিটি গঠন হয়। কমিটি প্রতি মাসে একটি সভা করার কথা। মেয়াদান্তে সদস্যরা চাইলে নির্বাচন হবে। সর্বশেষ ২০১৮-১৯সালে সমিতি অডিট হয়েছে।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আব্দুল মতিন বলেন, দীর্ঘদিন থেকে স্লুইছ গেট অকেজো সেটা আগে কেহ জানায়নি। পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির মূলকাজ হচ্ছে পানি সংরক্ষণ করে ফসল উৎপাদন দেখাশুনা করা। কিন্তু এখানে সমিতির কমিটির কোন কার্যক্রম নেই। কমিটি সক্রিয় থাকলে এমনটি হবার কথা নয়। সরেজমিন পরিদর্শন করে সেটা চালুর উদ্যোগ নেয়া হবে।