কুলাউড়া পৌর নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি !
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৫৭:৩৩,অপরাহ্ন ১৫ জানুয়ারি ২০২১ | সংবাদটি ৩৮৬ বার পঠিত
ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন জনৈক প্রার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কালো টাকার সন্ধানে ভিজিল্যান্স টিমের ৫ জন কর্মকর্তা মোবাইল কোর্ট নিয়ে ছুটে যান বর্তমান মেয়র শফি আলম ইউনুছের বাসায়। তবে টাকা বিতরনের কোন আলামত সেখানে পাওয়া যায়নি এবং অভিযোগ সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে নির্বাচন কমিশন সূত্র নিশ্চিত করেছে।
পৌরসভার ১, ৪,৫,৬, ৭নং ওয়ার্ডের কয়েকজন মহিলা ও পুরুষ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে কালো দুটি জাতীয় প্রতিকের প্রার্থীর পক্ষে টাকা বিতরণের সত্যতা মিললেও তারা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনের বাকী আর মাত্র ৩ তিন। দ্বিতীয়ধাপে ১৬ জানুয়ারি কুলাউড়া পৌরসভায় ব্যালেট পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীকে অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ, ধানের শীষ প্রতীকে সাবেক মেয়র কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ, নারিকেল গাছ প্রতীকে (আ.লীগের বিদ্রোহী) বর্তমান মেয়র শফি আলম ইউনুস এবং জগ প্রতীকে লড়ছেন শাজান মিয়া। এছাড়া কাউন্সিলর পদে ৩৩ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
বিজয় নিজের পক্ষে নিতে মেয়র ইউনুছ ও স্বতন্ত্র এক প্রার্থী পাঁচ হাজার ভোটারকে টার্গেট করে ইতোমধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাম, মোবাইল নাম্বার ও ভোটার কার্ডের ফটোকপি সংগ্রহের করা হয়েছে বলে সরকার দলীয় প্রার্থী বারবার অভিযোগ করে যাচ্ছেন । অপর দিকে সরকার দলীয় প্রাথীর পক্ষে উপজেলা ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে ভোটার প্রতি ১হাজার টাকা করে বিতরণ করছেন বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়া নিরীহ লোকজনকে জিম্মি করে ভোট আদায়ের চেষ্টাও চলছে। পরে টাকা বিতরণে ব্যবহার হচ্ছে বিকাশ, নগদ ও রকেট।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক মুদি ব্যবসায়ী বলেন, ১৬ জানুয়ারি হবে হিসাব-নিকাশ। তাই সৎ, যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিতে চাই। কিন্তু যেভাবে কালো টাকা বিতরণ শুরু হয়েছে। এখানে সৎ, যোগ্য প্রার্থী কি জয়ী হতে পারবেন? তাই ভোট দিতে চাই যিনি এগিয়ে আছেন, তাকেই।
এক নির্মান শ্রমিক বলেন, কাজ করে দৈনিক ৫শ টাকা পেতাম। বর্তমানে নৌকার প্রার্থীর সাথে কাজ করে দৈনিক এক হাজার টাকা করে পাচ্ছি।
প্রার্থীরা জয়ী হতে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কালো টাকা বিতরণ করছে। এতে সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাছাড়াও নৌকার প্রার্থীর পক্ষে অবৈধ অস্ত্রের মহড়া ও সন্ত্রাসী কায়দায় প্রচারনা, বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সকল ধরনের প্রচারনায় বাধা প্রদান করায় নৌকা এবারও ডুববে এবং শতকিছুর পরও নির্বাচন সুষ্টু ও নিরপেক্ষ হলে নৌকার প্রার্থী জামানত হারাবেন বলে ভোটারগণ মনে করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণ ভোটার জানান, কেউ টাকা নিয়ে এলে না ধরে উপায় নেই। টাকা ফেরৎ দিলে অহেতুক রোষানলে পড়তে হবে । তার চাইতে টাকা নিলেও সময়মত উপযুক্ত সৎ, যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেবেন বলে ঠিক করেছেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে বর্তমান মেয়র শফি আলম ইউনুছ বলেন, জীবনে কালো টাকা অর্জন করিনাই, অনেক পরিশ্রমের টাকা, বিলি করার প্রশ্নই উঠেনা। যে অসৎ ও চরিত্রহীন তার পক্ষে অপপ্রচার করা খুবই স্বভাবিক। নৌকার প্রার্থীর টাকা বিতরন কারীদের নাম ও স্থান সহ প্রশাসনকে অবহিত করেছি কিন্তু কোন এ্যাকশন দেখতে পাচ্ছিনা।
এ বিষয়ে সহকারি রিটার্নিং অফিসার ও কুলাউড়া উপজেলার নির্বাচন অফিসার আহসান ইকবাল বলেন, কাউকেই কালো টাকা বিতরণ করতে দেয়া হবে না। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেয়রের বাসায় মোবাইল কোর্ট করা হয়। কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি তবে আমরা উনাকে সতর্ক করেছি। নিয়মনীতি মোতাবেক প্রচারণা করতে হবে। আইন অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।