শর্তারোপ ও মুচলেকায় অব্যাহতি পেলেন বড়লেখায় প্রতারক মাদ্রাসা শিক্ষক কাওসার চক্র
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:১০:০৬,অপরাহ্ন ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | সংবাদটি ৫৬৬ বার পঠিত
সিলেট ব্যুরো : মৌলভীবাজারের বড়লেখার দক্ষিণভাগে প্রবাসী হাজী তাজ উদ্দিন আহমদের কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করে লুটে নেয়ার অন্যতম আসামী বহুল আলোচিত সেই প্রতারক মাদ্রাসা শিক্ষক কাওসার আহমদ ও তার সহযোগী ০৯জন আসামীকে কড়া তিরষ্কার ও শর্তারোপ সহ মুচলেকার বিনিময়ে হত্যা চেষ্ঠা মামলাপ হতে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) কাওসার সহ মোট ১০ জন আসামীকে মুচলেকার মাধ্যমে মামলা হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। যার ফলে দীর্ঘ ১০ মাস পর হত্যা চেষ্ঠা মামলার আসামী হতে অব্যাহতি পেলেন উক্ত অপরাধি চক্র।
এর আগে গত ৬ জানুয়ারী মোট ১১জন আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছিলেন মৌলভীবাজার নির্বাহি ম্যজিষ্ট্র্যাট আদালতের বিচারক মৌসুমী আক্তার। ঐদিন ধার্য তারিখে মামলার শুনানী শেষে সকল আসামীর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সকল আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন মামলার বিচারক বিজ্ঞ নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্র্যাট মৌসুমী আক্তার।বড়লেখা টিলাবাজার মোহাম্মদিয়া মাদ্রাসার মোহতামিম প্রতারক মাদ্রসা শিক্ষক কাওসার আহমদ সহ ও তার সহযোগিদের প্রতারণার ফাদে পড়ে সর্বস্ব হারানু সহজ সরল তাজউদ্দিন মৌলভীবাজার নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে নিজের ও পরিবারের জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলা নং ১৭/২০২০।
গত ৬ আগষ্ট ২০২০ তারিখে উপরোক্ত মামলা দায়ের করেন প্রতারণার স্বীকার প্রবাসী হাজী তাজ উদ্দিন। মামলার আসামীগণ হলেন, টিলাবাজার মোহাম্মদিয়া মাদ্রাসার প্রতারক শিক্ষক কাওসার আহমদ, তার সুদের ব্যবসা ও সকল প্রতারনার সহযোগী আব্দুল খালিক, কাওসার মুল্লার ওস্তাদ ও অপরাধের অন্যতম সহযোগী আব্দুল কাদির মুল্লা, দক্ষিণভাগ এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ফজলুর রহমান, আব্দুস শহীদ মুক্তা, ওবায়দুল্লাহ, সামছুল হক, গিয়াস উদ্দিন, মুজিবুর রহমান জয়নাল, জাহেদুল ইসলাম ও কয়েছ মিয়া। আসামীদের মধ্যে গিয়াশ উদ্দিন আদালতে কোন প্রকার হাজিরা না দিয়ে প্রবাসে চলে যাওয়ায় পলাতক আসামী বিবেচনায় তাকে মামলা হতে অব্যাহতি দেননি আদালত
মামলার বিবরণ অনুযায়ী প্রতারক কাওসার ও তার সন্ত্রাসী চক্রের প্রতারনা করে প্রবাসী সহজসরল তাজ উদ্দিন এর ৬ কোটি টাকারও অধিক সম্পদ লুটে নিয়েছেন। গত কিছুদিন যাবত দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় দৈনিকসহ স্থানীয় প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় প্রতারক শিক্ষক কাওসার আহমদ ও তার সহযোগী প্রতারক চক্র কর্তৃক সহজসরল হাজী তাজ উদ্দিনের সর্বস্ব হরনের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হতে থাকলে বিষয়টি সিলেট বিভাগ সহ দেশের সর্বত্র ভাইরাল হয়ে যায়। সাথে সাথে প্রতারক চক্রের শীর্ষ নেতা কাওসার মুল্লা, কাদির মুল্লা, আব্দুল খালিক,ফজলুর রহমান ও সামছুল হক সহ অপরাধ চক্রের নেতারা বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য বড়লেখা উপজেলার সর্বোচ্চ পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সর্বত্র হন্য হয়ে ঘুরেও কোথাও কোন আশ্রয় না পেয়ে বেছে নিয়েছেন তার সেই চিরচেনা অপরাধী ও সন্ত্রাসী পথ। এরই মধ্যে গত ৪এপ্রিল ও ৩আগষ্ট পরপর দু’দফা কাওসার ও তার সন্ত্রাসী চক্র তাজউদ্দিনকে প্রাণে হত্যার চেষ্ঠা করেছেন।
এলাকাবাসী হতে আরো জানান তাজ উদ্দিন নিজের জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে মামলা দায়েরের খবর পেয়ে গত ২০ আগষ্ট কাওসার মুল্লার নেতৃত্বে টিলাবাজার মোহাম্মদিয়া মাদ্রাসায় সাধারণ সভা আহ্বান করে উক্ত সভা থেকে হাজী তাজউদ্দিন সহ তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং নাম উল্লেখ করে কয়েক জন গণমাধ্যম কর্মীকে গলা, হাত,পা কেটে প্রাণে হত্যার প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করা হয়েছে। আর হুমকি দাতাদের মধ্যে অন্যতম হলেন, কাওসার মুল্লার প্রতারনা,সুদ ব্যবসা সহ সকল কুকর্মের সার্বক্ষনিক সহযোগী,মাদক,নারী কেলেংকারী সহ নানা অপরাধে জড়িত এবং বড়লেখা এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী,মোস্ট ওয়ান্টেড আসামী হিসেবে পুলিশের খাতায় ও আদালতে যার নাম রয়েছে সেই ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী ফজলু মিয়া।
উল্লেখ্য যে, উক্ত সন্ত্রাসী ফজলু মিয়া হাজী তাজ উদ্দিন ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যামামলা দয়ের করেছিলেন, কিন্ত আদালতের কাছে মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় সাথে সাথে মামলা খারিজ করেছেন আদালত।
এ বিষয়ে মামলার কুশলী এডভোকেট তোফায়েল আহমদ বলেন, মুচলেকায় আসামীদের আদালত জামিন দেয়ায় আমার মক্কেল আদালত কর্তৃক অনেক সম্মানিত হয়েছেন। আর ১০৭ ধারার মামলায় এ প্রাপ্তি অনেক সম্মানের।