সিলেট-৩ আসনে মিসবাহ সিরাজ নৌকার মাঝি ?
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:২৩:৫৯,অপরাহ্ন ৩১ মার্চ ২০২১ | সংবাদটি ৪১৩ বার পঠিত
এমএ রহিম/মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন, সিলেট :
সেই শৈশব থেকে দেখে আসছি এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে। বঙ্গবন্ধুর ঘাঁটি সৈনিক। জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত কর্মী। দলীয় নেতাকর্মীদের প্রাণ। আওয়ামী লীগের আদর্শ নিয়ে ঘুরে বেড়ান নগর থেকে গ্রামে। ঘরে ঘরে পৌঁছে দেন নৌকার স্লোগান। ছাত্রলীগের অগ্রসৈনিক হিসেবে মিসবাহ সিরাজ রাজপথে লড়াই করেছেন। যুগে যুগে এরশাদ, বিএনপি-জামায়াত সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে সোচ্চার হয়ে লড়াই করতে দেখেছি। ওইসব সরকারের রোষাণলে পড়ে মিসবাহ সিরাজকে একাধিকবার কারাবরণ করতে হয়েছে। আজো তিনি দলীয় কর্মংকান্ডের আদর্শ এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকান্ডের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন মানুষের কাছে। দলীয় নেতাকর্মীদের এই প্রিয় নেতা মিসবাহ সিরাজকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন সিলেট-৩ আসনের সাধারণ কর্মীরা। এই আসনের কর্মীরা এখন অধীর অপেক্ষায় নৌকার মাঝি হয়ে নির্বাচনী মাঠে আসবেন জননেত্রী শেখ হাসিনার একান্ত বিশ্বস্ত কর্মী মিসবাহ সিরাজ। জানালেন সিলেট দক্ষিণ সুরমার আওয়ামী লীগের কর্মী সিতাব আলী। তিনি জানালেন এই আসনের সিংহভাগ দলীয় নেতাকর্মী নৌকার মাঝি হিসেবে মিসবাহ সিরাজকে দেখতে চান।
সিলেট-৩ আসনের (ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা) সদ্য প্রয়াত সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী (কয়েস চৌধুরী) এর মৃত্যুতে শূন্য হওয়ায় আসনটিতে উপনির্বাচন নৌকার প্রার্থী কে হচ্ছেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। সকল আলোচনায় শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে মিসবাহ সিরাজের নাম উঠে আসছে। দলীয় অনেক কর্মীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, সিলেট-৩ আসনেরর মানুষের সাথে মিসবাহ সিরাজের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। যে সম্পর্কের কারণে মিসবাহ সিরাজকে আরো কাছে পেতে চান তারা। জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনেকে দাবি জানিয়েছেন তাদের প্রিয় মিসবাহ সিরাজকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১১ মার্চ মারা যান সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগের দলীয় এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। তাঁর মৃত্যুর পর গত ১৫ মার্চ সংসদ সচিবালয়ের পক্ষ থেকে এ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। নির্বাচন কমিশন ওই আসনে রমজানের আগে নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে। তবুও আসন শুন্য হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এ আসনটি সিলেট নগরের কাছাকাছি হওয়ায় গুরুত্বও অনেক বেশি। এছাড়া শিল্পনগরী ফেঞ্চুগঞ্জও রয়েছে এ আসনে।
এই আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয় কে পাচ্ছেন তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে দলীয় কর্মীরা বলেছেন রাজনৈতিক বিবেচনায় সিনিয়র রাজনীতিক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ নৌকা প্রতীক পাওয়ার ব্যাপারে সর্বাধিক দাবি রাখেন। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়গুলোতে এমপি কয়েছের সাথে মিসবাহ সিরাজের অনেক ঘনিষ্ট ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক ছিল। ভারসাম্যপূর্ণ একটি সর্ম্পকের ইতিবাচক চিত্র দল তথা আপামর মানুষের চোখে ভাসার আগেই করোনার নীল দংশনে পরপারে পাড়ি জমিয়ে অনবদ্য এক স্মৃতি এঁকে দিয়েছেন রাজনীতিক সহযোদ্ধাদের মনে। সেকারণে তাঁর মৃত্যুতে আফসোসের সুর ছিল সকলের মধ্যে। এমন পরিবেশ পরিস্থিতির মধ্যে মিসবাহ সিরাজের নির্বাচনী একটি আবেশ দেখা দিয়েছে এ আসনে। ব্যক্তিগতভাবে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ না করলেও রাজনৈতিক বিবেচনায় এই আসনে নৌকার মনোনয়ন দিয়ে তাকেই পুরষ্কৃত করতে পারেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা; এমনটাই সম্ভবনা প্রকাশ করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
সম্প্রতি মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের মায়ের মৃত্যুর কারণে তিনি ব্যক্তিগতভাবে মানসিকভাবে অনেক ভেঙ্গে পড়েছেন। মায়ের প্রতি ভালবাসার কথা বলতে গিয়ে মিসবাহ সিরাজ বলেন, ৬১ বছর বয়সে রাজনৈতিক মামলায় বারবার কারা বরণ করতে হয়েছে, কারাফটকে প্রতি সপ্তাহেই অশ্রুসিক্ত নয়নে মাকে দোয়া ও আশির্বাদের ঝুলি নিয়ে দাঁড়াতে দেখেছি। আর নামাজের সময় মায়ের ঘরে গেল দু’হাত তুলে আমার নাম ধরে আল্লাহর দরবারে কাঁদতে দেখতাম, গভীর রাতেও এই দোয়া চলতো। আজ আমি সে দোয়া হতে বঞ্চিত। তাই মায়ের জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা এলাকার বেশ কয়েকজন ভোটারের সাথে কথা বলে সিলেট- ৩ আসনে তাদের প্রার্থী পছন্দ ও অপছন্দের বিষয়টি উঠে এসেছে। অধিকাংশ সাধারণ ভোটার মনে করেন, যে প্রার্থী রাজনৈতিকভাবে কেন্দ্রের সু পরিচিত, আস্থাবান, শিক্ষিত ও প্রজ্ঞাবান, নির্বাচনী এলাক্রা সন্তান এমনকি যিনি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে প্রভাব বিস্তারে সক্ষম, সে রকম প্রার্থীর মাধ্যমেই জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলণ ঘটবে। অনেকে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর অসমাপ্ত উন্নয়নের জন্য এলাকার সন্তান মিসবাহ সিরাজের প্রতিই তাদের আস্থার কথা তুলে ধরেছেন।