ঊষারবাণী শিক্ষা ডেস্ক : প্রভাষক মো. শফিকুল ইসলাম জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদ নিয়ে চুয়াডাঙ্গার বড়সলুয়া নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজের দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন। জাল সনদে শিক্ষকতা করে এমপিও বাবদ নিয়েছেন ২১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। কিছুদিন আগে জালসনদে শিক্ষকতার বিষয়টি সমানে আসলে তিনি পদত্যাগ করেছেন। বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তাই, জাল সনদধারী এ শিক্ষকের এমপিও বাবদ নেওয়া ২১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
অধিদপ্তর থেকে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও অধ্যক্ষকে এ নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। একইসাথে জাল সনদে দীর্ঘদিন চাকরি করা শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, গত ১ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে শিক্ষা অধিদপ্তরকে পাঠানো এক চিঠিতে জলসনদধারী প্রভাষক মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়। অভিযোগ উঠেছিল, বড়সালুয়া নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মো. শফিকুল ইসলাম শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জাল করে সরকারি কোষাগার থেকে ২৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ১ মে প্রতিবেদন পাঠাতে দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল শিক্ষা অধিদপ্তরকে।
অধিদপ্তর থেকে পাঠানো চিঠিতে জানানো হয়েছে, গত ২৩ মে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে অভিযোগটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় খুলনার আঞ্চলিক কার্যালয়ের দুই কর্মকর্তাকে। তারা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তার মতামতের বরাত দিয়ে শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, কলেজটির প্রভাষক পদ থেকে সদ্য পদত্যগকারী শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম চতুরতার আশ্রয় নিয়ে জাল বা ভুয়া শিক্ষক নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন এবং সে সুবাদে বেতন-ভাতা বাবদ সরকারি কোষাগার থেকে মোট ২১ লাখ ৬৯ হাজার ৩৮৪ টাকা উত্তোলন করেছেন। এ বিষয়টি সুস্পষ্ট। তদন্ত কমিটিও তার শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি অনলাইনে যাচাই করে মিথ্যা তথ্য পেয়েছে। সুতরাং জাল বা ভুয়া সনদ ব্যবহার এবং অবৈধভাবে সরকারি টাকা উত্তোলনের দায়ে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
অধিদপ্তর আরও বলছে, তদন্ত কমিটির মতামত ও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এ বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য অধ্যক্ষকে চিঠি পাঠানো হয় ও গভর্নিং বডির সভাপতিকে মতামত দেওয়া জন্য চিঠি দেওয়া হয়। অধ্যক্ষ ও সভাপতি জবাব দাখিল করেছেন। তবে, অধ্যক্ষের জবাব ও সভাপতির মতামত সন্তোষজনক হয় নি।
জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় প্রভাষক মো. শফিকুল ইসলামের বেতন-ভাতা বাবদ সরকারি কোষাগার থেকে নেওয়া মোট ২১ লাখ ৬৯ হাজার ৩৮৪ টাকা সরকারি কোষাগার ফেরত দিয়ে চালানের কপি দাখিল করতে অধ্যক্ষ ও সভাপতিকে পাঠানো চিঠিতে বলেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। একইসাথে প্রভাষক মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ও সভাপতিকে।