বিশেষ প্রতিনিধি : কুলাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ার এর বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারই আপন বোন ও তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারের বোন অভিযোগ করে লিখিত বক্তব্যে বলেন তার কাছে ৫লক্ষ টাকার চাদা দাবী করেছেন তার ভাই এবং দাবী পুরণ না হওয়ায় বিভিন্ন হয়রানি মূলক মামলা করে বোনের পরিবারকে নির্যাতন করে আসছেন।
৬ অক্টোবর দুপুরে লিখিত বক্তব্যে তার বোন অভিযোগ করে বলেন- কুলাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আনোয়ার দীর্ঘ দিন যাবৎ অর্থাৎ ২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে এক টানা ৮ বছর ধরে একই জায়গায় কুলাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরী করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে একই জায়গায় কর্মরত থাকার সুবাদে সরকারি দায়িত্ব পালনে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বিজ্ঞানের সরজ্ঞামাদি ও পাঠ্য পুস্তক পৌঁছে দেয়ার নির্দেশনা থাকলেও সে তা না করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর এই খরচের দায়িত্ব দিয়ে খরচের বরাদ্ধকৃত সরকারি টাকা আত্মসাৎ করছেন। তাছাড়া সরকারী পাঠ্য পুস্তক বিতরণে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে আর্থিক সুবিধা নিয়ে দূর্ণীতি করে থাকেন। অফিসেও নিয়মিত উপস্থিত থাকেননা।
তিনি আরো বলেন- আমার সন্তানরা প্রবাসে থাকিয়া হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠায়। এ টাকা দিয়ে আমাদের সাংসারিক খরচ ও আনুসঙ্গিক আয়দায় আমরা করে থাকি। বাড়িতে আমি ও আমার স্বামী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক একা থাকি। আমার পিতা: মো: হুছন উল্লা জীবিত থাকা অবস্থায় রাজনগর উপজেলার ৬নং টেংরা ইউনিয়নের আদিনাবাদ গ্রামের আব্দুল খালিকের সঙ্গে আমাকে বিয়ে দেন। বিয়ের কয়েক বছর পর আমার পিতার পরামর্শে চাটুরা গ্রামে আমার পিতার বাড়ির অনতি দুরের জমি খরিদ করিয়া সেখানে আমি বসবাস করে আসিতেছি। এমতাবস্থায় আমার ছোট ভাই মো: আনোয়ার (মাধ্যামক শিক্ষা কর্মকর্তা,কুলাউড়া) আমার স্বামীর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
আমরা তার চাহিত ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে অক্ষমতার কথা জানাইলে সে আমাদের বাড়ির পাশে থাকা জমি আমাদের কাছে বিক্রয় করতে ইচ্ছা প্রকাশ করে এবং এই জমির মূল্য বাবদ তাকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য বলে। আমি ও আমার স্বামী তাকে এত টাকা দিতে পারবো না এবং জমি কিনতে অপরাগতা প্রকাশ করি। এতে সে আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে নানা ভাবে হুমকি ও হয়রানি করার ফন্দি আটে।
এক পর্যায়ে আমাদের কেনা জায়গা জমি তার নিজের কব্জায় নেওয়ার জন্য আত্মসাৎ করতে মৌলভীবাজারের ১ম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে স্বত্ব মোকদ্দমা নং ৩৯/২০১৩ইং দায়ের করে। এ ছাড়াও এ্কই বছর একই আদালতে আরো ২টি মামলা দায়ের করে। একাধিক মামলায় জড়িয়ে নানা ভাবে আমাদেরকে হয়রানি করছে।
আনোয়ার বিগত বিএনপি সরকারের আমলে প্রথম থানা প্রজেক্ট কর্মকর্তা(টিপিও) হিসেবে চাকুরী নেওয়ার সময় তার কিছুই ছিল না।অনেকটা নিস্ব ও অসহায় ছিল। কিন্তু ঘুষ দুর্নীতি আশ্রয় নিয়ে চাঁদাবাজি, সুদ ও নিয়োগ বাণিজ্য করে গত কয়েক বছরে অঢেল টাকার মালিক হয়েছে। দীর্ঘ একই জায়গায় চাকুরী করার কারণে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগসহ নানা প্রকার অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে সে। শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারি প্রার্থীরা চাকুরী পাইয়ে দেওয়ার নামে অলিখিত চুক্তি মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা অবৈধ পথে কামাই করছে। বিভিন্ন প্রতিষ্টানে অনিয়মের মাধ্য মে গভর্ণিং বডি/ ম্যানেজিং কমিটি তৈরী করে প্রচুর অবৈধ সম্পত্তির মালিক হয়েছে সে।
অবৈধ পথে আয়ের টাকা দিয়ে সে ইতিমধ্যে তার নিজের নামে ও স্ত্রী সন্তানের নামে মৌলভীবাজার শহরের গির্জাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েক কোটি টাকার জমি গোপনে ক্রয় করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে নামে বেনামে একাউন্টে এবং এফ ডি আর করে কয়েক কোটি টাকা জমা আছে তার। এসব অনুসন্ধান করলেই তার আয় বহিভূত নগদ টাকা ও অঢেল সম্পদের পাহাড়ের সত্যতা পাওয়া যাবে।
উপস্থিত সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারের বোন বলেন- বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন স্বাধীন দেশে চলমান ঘুষ-দুর্নীতি বিরোধী অভিযান অব্যাহত আছে। দেশের স্বার্থে তার দুর্নীতির বিষয়টি নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে দুর্নীতি দমন বিভাগ ও সরকারের কাছে দাবি জানাই।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- কুলাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ার বোনের জামাই মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, তার বড় বোন আলেয়া বেগম, রোকেয়া বেগম, ভাগনা শফিক মিয়া, প্রতিবেশী মাম্মদ মিয়া, ইলিয়াছ আলী, আব্দুল খালিক (২), মোঃ জিলু মিয়া, শাহাব উদ্দিন প্রমুখ।