ব্রাহ্মণবাজারের গণি কলেজের প্রভাষক দুর্ধর্ষ আলম বাহিনী কর্তৃক আবারো জায়গা জবর দখলের চেষ্টা
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৪৭:০৪,অপরাহ্ন ১৭ নভেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ২১১৭ বার পঠিত
বিশেষ প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মনবাজার ইউনিয়নের ‘চকেরগ্রাম’ নিবাসী এ.এন.এম আলম ও তার ছোট ভাই ডালিম কর্তৃক ইউনিয়নের রাজাপুর নিবাসী নিরিহ এখলাছুর রহমানের ভ‚মি জবর দখলের উদ্দেশ্যে মারপিট, হাঙ্গামা ও মিথ্যা মামলা করে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, উক্ত আলম স্থানীয় ইউছুফ-গণি কলেজের একজন শিক্ষক ও ইতিপূর্বেও সে একাধিকবার তার আজ্ঞাবহ ইউছুফ-গণি কলেজের গভণিংবডিতে জড়িত লোকদের ব্যবহার করে আরো অনেক নিরিহ পরিবারের জায়গা দখল করে সর্বশান্ত করেছে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করেছে।
ভুক্তভোগী এখলাছুর রহমানের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মনবাজারের রাজাপুর নিবাসী এখলাছুর রহমান ও আব্দুর রহমান বিগত ১৩/০১/২০০০ইং সালে তৎকালীন নছিরাবাদ গ্রাম নিবাসী বর্তমানে নবীনগর নিবাসী সাবেক কেন্দ্রীয় মুসলিম লীগ নেতা ও স্থানীয় ইউছুফ-গণি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মরহুম এ.এন.এম.ইউছুফ(ইউছুফ মুক্তার) এর নিকট হতে সাফকাবালা দলিল মূলে ১একর সোয়া২৪শতক জায়গা ক্রয় করেন এবং নিয়ম মাফিক জায়গার খাজনা পরিশোধ, নিজ নামে যথাযথ প্রক্রিয়ায় জমি নামজারি করেন এবং সেটেলমেন্টেও নিজনামে রেকর্ডভুক্ত করেন। দীর্ঘ ২০বছর যাবত তিনি নির্বিবাদে জায়গা ভোগ দখল করে আসছেন। জায়গাটি জমির দলিল দাতা এ.এন.এম.ইউছুফ এর ভাতিজা কথিত দূর্ধর্ষ ভুমিখেকো ও মামলাবাজ এ.এন.এম আলম ও ডালিমের বাড়ীর নিকটবর্তী হওয়ায় প্রায় সময় সে ও তার ভাড়াটিয়া গুন্ডা বাহিনি দিয়ে দখল করে নেয়ার হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল।
হঠাৎ করে গত ১৮/১০/২০১৯ইং তারিখে বিকাল বেলা এ.এন.এম আলম ও ডালিম এবং তাদের ভগ্নিপতি শাহআলম সরকার প্রায় ১০/১২ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসি সহ রামদা,বল্লম,লাটি ,কুড়াল সহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এখলাছুর রহমানের জায়গা জবর দখল করতে আসেন। খবর পেয়ে তিনি ঘটনা স্থলে গিয়ে জায়গা দখলে বাধা দিলে আলম বাহিনী তাকে একা পেয়ে প্রচুর মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। স্থানীয় জনতা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এলাকাবাসী জানান, পুলিশ ও স্থানীয় জনতা না এলে সন্ত্রাসীরা তাকে প্রাণে মেরেই ফেলত এবং জায়গাও দখল করে নিত। এখলাছুর রহমানের পরিবার ও এলাকাবাসী হতে আরো জানা যায়, জায়গার দখল চেষ্ঠাকারী আলম হামলা ও মারপিঠেই ক্ষান্ত হয়নি, সে তার ছোটভাই ডালিমকে দিয়ে ঘটনার পরপরই কুলাউড়া থানায় মিথ্যা অভিযোগে পিটিশন জমা দিয়েছে। কুলাউড়া থানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড না করায় সে মৌলভীবাজার অতিরিক্ত ম্যজিষ্ট্র্যাট আদালতে এখলাছুর রহমান বৈধ ভোগদখলে থাকা জায়গার উপর ১৪৪ধারা জারির জন্য মামলা করিয়েছে আলম। মামলা নং ২৫৬/২০১৯। এছাড়াও এ.এন.এম আলমের ছোট ভাই ডালিম সহকারী কমিশনার ভুমি কুলাউড়া কার্যালয়ে এখলাছুর রহমানের নামজারিকৃত জায়গার নামজারি বাতিলের জন্য মিথ্যা তথ্য সম্বলিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী এখলাছুর রহমান জানান, “এলাকায় ভূমিদস্যু হিসিবে অতি পরিচিত এ.এন.এম আলম ও তার ছোট ভাই ডালিম শুধু আমার জায়গার উপর লোভ করে দখল করতে আসা প্রথম ঘটনা নয়, এরা ইতি পূর্বে কলেজের নামকরে চকেরগ্রামের নিরিহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্টি মুচি পরিবারের জায়গাও অন্যায় ভাবে দখল করে তাদের গাছপালা ফসলাদি বল পূর্বক কেটে নিয়েছে, তাদের দেবতা ঘর ও মুর্তি ভাংচুর করেছে এমন কি তাদের শ্মশানের জায়গাও জবর দখল করেছে। আমি মামলাবাজ ও ভুমিখেকো আলম বাহিনীর ভয়ে অত্যন্ত শঙ্কিত আছি। আমি প্রশাসন সহ এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতা চাই।
চকেরগ্রাম এলাকার বাসিন্দা ব্রাহ্মনবাজার ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার জয়নাল আবেদীন খান বলেন, আমাদের জানামতে রাজাপুরের এখলাছুর রহমান জায়গাটি ২০ বছরেরও বেশী সময় আগে মরহুম এএমএম ইউছুফ এর নিকট হতে ক্রয় করে ভোগ দখলে আছেন। এই জায়গাটি আলমের ছিল বলে কখনো শুনিনাই। তবে শুনেছি আলম ও তার ভাই ডালিম এখলাছুর রহমানের জায়গা দখল করতে গিয়েছিল, পুলিশ বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেছে। ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলামনা।
ব্রাহ্মনবাজর ইউনিয়নের বর্তমান মেম্বার চকেরগ্রাম নিবাসী মোস্তফা কামাল বলেন, প্রথমে জায়গাটি এএনএম ইউছুফ তাঁর মায়ের নামে দলিল প্রধান করেন পরবর্তীতে আবার এখলাছুর রহমানকে দলিল প্রদান করেন। ফলে আগের দলিলের কারণে আলম দাদীর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে জায়গা দাবী করছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য আমি ও চেয়ারম্যান মমদুদ হোসেন মিলে উভয়পক্ষ কে সমাধানের জন্য একটি প্রস্তাব দিয়েছিলাম যা আলমের পক্ষ মানেনাই।
মরহুম এএনএম ইউছুফ এর ছেলে এ.এন.এম মুছাখাজার কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে মোটো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়ে পরে কথা বলবেন বলে মোবাইল রেখে দেন। তবে তিনি পরে আর কোন কথা বলেননি।
এমএগণি কলেজের শিক্ষক অভিযুক্ত এ.এন.এম.আলমের সাথে বারবার মুটো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।
কুলাউড়া থানার এস.আই আব্দুর রহিম বলেন, জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির খবর পেয়ে অফিসার ইনচার্য মহোদয়ের নির্দেশে সংগীয় ফোর্স নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করি। এ বিষয়ে একটি পক্ষ থানায় একটি পিটিশন দিয়েছে আবার কোর্টেও অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি আমাদের পর্যক্ষেণে রয়েছে।