কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিনা চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যু
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:১৪:১৩,অপরাহ্ন ১৫ জুন ২০২০ | সংবাদটি ২৮২৯ বার পঠিত
কুলাউড়া প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকদের অমানবিক অবহেলার স্বীকার হয়ে সিমি বেগম নামক ৬বছর বয়সী এক শিশূর মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। হালকা পাতলা পায়খানা ও জ¦রের উপসর্গ নিয়ে সকালে রোগীর মা রুমি বেগম তার কন্যা শিশুকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসলে বিনা চিকিৎসায় প্রায় ৪ঘন্টা পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিশুটি।
সোমবার (১৫জুন) উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের কলিমাবাদ গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল লতিফের কন্যা সন্তানের জ¦র ও পাতলা পায়খানার উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসার জন্য সকাল ১০ ঘটিকায় কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন তার স্ত্রী রুমি বেগম। সেখানে ইমারজেন্সীতে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগিকে না দেখেই শিশুটির করোনা রোগ হয়েছে বলেই তাদের রুম থেকে তাদের বের করে দু’তলায় নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে গেলে উপস্থিত ডাক্তার ও নার্সগণ আবার নিচতলায় নিয়ে যেতে বলেন, নিচতলায় ডাক্তার আবার তাকে আউডোরের টিকেট আনতে বলেন। আউটডোরে টিকেটের জন্য গেলে দায়িত্বরত কর্মচারী টিকেট দিতে অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে বেশী টাকার বিনিময়ে টিকেট আনতে সক্ষম হলেও ডাক্তারগণ এ রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে নানা অজুহাতে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। এভাবে প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা হাসপাতালের বাহিরে বারান্দায় মৃত্যুযন্ত্রনায় ছটফট করতে করতে বিনা চিকিৎসাতেই শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
শিশুটির মা রুমি বেগম গগণ বিদারী চিৎকারে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ডাক্তার নামক কসাইদের কারণে আজ আমার মেয়েকে বাঁচাতে পারলামনা। এরা ডাক্তার নয়, খুনি। ঐ কসাইরাই আমার মেয়ের খুনি, আমার মেয়েকে তারা হত্যা করেছে, আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
হাসপাতাল বারান্দায় প্রত্যক্ষ দর্শী অনেকেই বলেন, ৩ঘন্টা যাবত মহিলাটি তাঁর শিশু কন্যাকে নিয়ে হাসপাতালে অনেক আহাজারী করেছে কিন্তু একজন ডাক্তার বা নার্স বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেননি। বিনা চিকিৎসাতেই বাচ্চাটি মারা গেল।
প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল লতিফ জানান, মহিলাটি তাঁর বাচ্চাটিকে নিয়ে ছটফট করার দৃশ্য তিনি নিজেই প্রত্যক্ষ করেছেন।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ডাক্তার নুরুল হক ডাক্তারদের অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, শিশুটির একসপ্তাহ থেকে জ্বর,কাঁশি ও পাতলা পায়খানা ছিল। করোনার প্রাথমিক লক্ষণ প্রতিয়মান হলে তাকে দু’তলায় করেনা ইউনিটে নেয়া হয়। প্রসেসিং কার্য ও রোগীদের লম্বা লাইন থাকায় এখানে প্রায় দেড় ঘন্টা দেরি হয়ে যায় এবং শিশুটি মারা যায়। মৃতের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।