কুলাউড়ার ব্রাহ্মণবাজারে ভয়াবহ ছিনতাইয়ের ঘটনা ; সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা ছিনতাই, থানায় মামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:০৫:০৬,অপরাহ্ন ২০ ডিসেম্বর ২০২০ | সংবাদটি ২৪২২ বার পঠিত
মাশরুর ফারহান, কুলাউড়া থেকে : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের নাছনি এলাকায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে পেশাদার ছিনতাইকারী ও দাগী আসামী নাজুক মিয়া, কাওছার আহমদ ও রায়েল মিয়া কর্তৃক ট্রেভেল্স ব্যববসায়ীকে প্রাণে হত্যার চেষ্ঠা সহ নগদ সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ছিনতাই করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত ইউনিয়নের সাতরা গ্রামের মাহতাব মিয়া মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। ঘটনার কারণে ছিনতাইয়ের স্বীকার মাহতাব মিয়ার ভাই ফেরদৌস আহমদ বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর ০৯/২৬৮।
রোববার (১৩ ডিসেম্বর) ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের নাছনী গ্রামস্থ সাতরা নামকস্থানে উপরোক্ত ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী কান্ড ও ছিনাইয়ের ঘটনাটি সংঘঠিত হয়।
মামলার এজাহারের বিবরণ, বাদীর মৌখিক বিবরণ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের নাছনী গ্রামের আব্দুস ছোবহানের ছেলে নাজুক মিয়া, টুনু মিয়ার ছেলে কাওছার আহমদ ও আব্দুর রহমানের ছেলে রায়েল মিয়া দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় চুরি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও সেবন সহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। তাদের অত্যাচারে ভয়ে কেউ কথা বলতে পর্যন্ত সাহস করেনা। ঘটনার দিন সকাল ১২.৩০ ঘটিকার সময় ইউনিয়নের সাতরা গ্রামের ট্রেভেল্স ব্যবসায়ী মাহতাব মিয়া নিজবাড়ী হতে নিজের প্রাইভেট কার নিয়ে ড্রাইভার রফিক মিয়া (পিতা জমির মিয়া গ্রাম চকের গ্রাম) সহ হ্যান্ড বেগে নগদ ৩,৫০,০০০ টাকা নিয়ে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্টান এম.এস.ফারজানা ট্রেভেল্স, কাকলী মার্কেট, কদমতলী সিলেটের উদ্দেশে রওয়ানা দিলে বাড়ী হতেপ্রায় ১৫০গজ দূরে আসা মাত্রই বিবাদী কাওছার আহমদ পূর্ব পরিচিতির সুবাদে কৌশলে সিগনাল দিয়ে গাড়ী থামিয়ে তাকে একটু সামনে নেয়ার জন্য অনুরোধ করলে তাকে গাড়ীতে উঠানো হলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার সংগের বর্ণিত বিবাদীহণ সহ সংগীয় আরো ৪/৫জন টাকা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে সরকারীপার নামক স্থানে দেশীয় লাঠি, দা, লোহার রড নিয়ে ওৎ পেতে থাকে। ঘটনাস্থলে পৌছা মাত্রই সমুহ বিবাদী গণ এক যোগে গাড়ীর উপর হামল করে এলোপথাড়ী ভাংচুর শুরু করে এতে গাড়ীর প্রায় ৬০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।
ব্যবসায়ী মাহতাব মিয়া নিজেকে রক্ষার্থে গাড়ীর ভিতর হতে বের হওয়ার চেষ্ঠা করলে বিবাদী নাজুক মিয়া তার হাতের ধারালো দা দিয়ে মাহতাব মিয়ার মাথার মধ্য ভাগে ছেদ মারলে মারাত্বক জখম হয়। সাথে সাথে বিবাদী কাওছার আহমদ মাহতাব মিয়াকে মাথা লক্ষ করে ছেদ মারলে তিনি তা হাত দ্বারা প্রতিহত করতে গেলে তার তিনটি আঙ্গুল কেটে মারাত্বক জখম হয়। বিবাদী রায়েল মিয়াও তার হাতের দা দিয়ে ড্রাইভার রফিক মিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছেদ মারিলে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে তার বাম হাতের কনুয়ে মারাত্বক কাটা ও জখম হয়। সন্ত্রাসীগণ আহত মাহতাব মিয়া ও রফিক মিয়াকে মরার মতো রাস্তায় ফেলে রেখে মাহতাব মিয়ার টাকার ব্যাগটি(নগদ ৩লক্ষ ৫০ হাজার টাকা সহ) বিবাদী নাজুক মিয়া নিয়ে যায়। আহতদের আর্ত চিৎকারে স্থানীয় ইব্রাহিম আলী ও জুবেল মিয়া এগিয়ে এসে আহদের উদ্ধার করে খবর দিলে মামলার বাদী ফেরদৌস মিয়া খবর পেয়ে তার ভাই ও ড্রাইভারকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে মাহতাব মিয়ার মাথা ও হাতে সর্বমোট ২৩টি সেলাই লাগে এবং ড্রাইভার রফিক মিয়ার শরীরে ৭টি সেলাই লাগে।
আহত মাহতাব মিয়ার শারিরীক অবস্থার মারাত্বক অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত সিলেটওসানী হাসপাতালে রেফার করেন।। বর্তমানে সেখানে সে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে বলে জানা গেছে।
মামলার দতন্তকারী দারগা বাবু পরিমল জানান, অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। আসামী গ্রেফতারের প্রচেষ্ঠা অব্যাহত আছে।
মামলার বাদী ফেরদৌস আহমদ বলেন, মামলা তুলে নেয়ার জন্য আসামিদের অব্যাহত হুমকির কারণে বাড়ী ছেড়ে থাকতে হচ্ছে। আসামীদের দৌরাত্ব এতই বেশী যে, জানমাল নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন আছি।