নাজাতের দশকের দ্বিতীয় দিন
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:১২:৪৯,অপরাহ্ন ০৫ মে ২০২১ | সংবাদটি ৫১২ বার পঠিত
শাহ নজরুল ইসলাম : আজ বুধবার, ২২ রমজান ১৪৪২ হিজরি। নাজাতের দশকের দ্বিতীয় দিন। আজকের দিবাগত রাত শেষ দশকের বেজোড় রাত। শবে কদর হবার সম্ভাবনা আছে। সকল রাতের মধ্যে শবে কদরের মর্যাদাই সবার শীর্ষে। এ রাতের মর্যাদা নির্দেশ করে কুরআন মজীদে পূর্ণাঙ্গ একটি সূরা নাযিল হয়েছে। সূরাটির নাম সূরাতুল-কাদর। কুরআন মজীদের ৯৭ নং সূরা। এ সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ ৫ আয়াত ও এক রুকু’ বিশিষ্ট। এতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন ১. নিশ্চয় আমি কুরআন নাযিল করেছি কদরের রাতে ২. আর কদরের রাত সম্পর্কে তুমি কী জান? ৩. কদরের রাত হচ্ছে হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ৪. সেই রাতে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হন প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে ৫. শান্তিই শান্তি, সেই রজনী, উষার অবির্ভাব পর্যন্ত। সূরাটির শানে নুযূল সম্পর্কে বিখ্যাত মুফাসসীর মুজাহিদ রহ. বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সা. বাণী ইসরাইলের একজন মুজাহিদের কথা উল্লেখ করে বললেন যে, ‘তিনি লাগাতার এক হাজার মাস পর্যন্ত জিহাদে মশগুল
ছিলেন। একথা শুনে সাহাবায়ে কেরাম খুবই আশ্চার্যান্বিত হলেন । তখনই এ সূরা অবতীর্ণ হয়। এতে একথা প্রতীয়মান হয় যে, এ রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম (দ্র: তাফসীরে মা আরিফুল কুরআন)। এ মহিমান্বিত রাতকে লাইলাতুল কদর নামে অবহিত করার তাৎপর্য কী? এ সম্পর্কে সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যাকার ইমাম নবীব রহ. লিখেছেন, এ রাতের নাম লাইলাতুল কদর এ জন্য রাখা হয়েছে যে কাদর মানে তাক্বদীর বা ভাগ্য ।
আর এই রাতে মানুষের পরবর্তী এক বছরের তাক্বদীর বা ভাগ্য রিযিক জন্ম মৃত্যু কর্তব্যরত ফেরেশতাদের কাছে বাস্তবায়নের জন্য ন্যস্ত করা হয়। অথবা কদর মানে সম্মান ও মর্যাদা আর যেহেতু এ রাতের সম্মান ও মর্যাদা এবং শ্রেষ্ঠত্ব অনেক বেশি । তাই, এ রাতকে লাইলাতুল কদর বলা হয়। (নববী শরহে মুসলিম) আবু বাকর ওয়াররাক বলেছেন, কদর মানে সম্মান ও মর্যাদা এ রাতকে লাইলাতুল কদর এ জন্য বলা হয় যে, পূর্ববর্তী জীবনে আমল না করে যে মানুষের কোন সম্মান ও মর্যাদা ছিল না সেও এ রাতে তাওবা ইস্তেগফার এবং ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হতে পারে। (মাআরিফুল কুরআন ৮ম খণ্ড) আনাস রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন লাইলাতুল কদরে জিব্রাইল আ. একদল ফেরেশতা নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং দাঁড়ানো বা বসা অবস্থায় যারা আল্লাহর যিকির মশগুল তাদের জন্য রহমতের দু’আ করেন।
লাইলাতুল কদর কোন রাত এ সম্পর্কে বিভিন্ন বর্ণনা রয়েছে। উম্মুল মুমিনীন আয়শা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেন, রাসূল স. ইরশাদ করেছেন’ ‘তোমরা লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে।’ তাই, আসুন! যথাযথ গুরুত্ব ও মর্যাদা সহকারে এ রাতটি অতিবাহিত করি। মহান মা’বুদের দরবারে কড়া নাড়ি। তাঁর কুদরতী পায়ে পড়ে থাকি। তিনি যেন আমাদের ক্ষমা করে দেন। আমাদের সমস্ত মুর্দেগানকে মাফ করে দেন এবং মুসলিম উম্মাহর মুক্তি নসীব করেন। আমীন।