কুলাউড়ায় ঊষারবাণী সম্পাদকের পিতার ৩১তম মৃত্যু বার্ষিকি পালিত
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৫৩:০৭,অপরাহ্ন ১১ ডিসেম্বর ২০২২ | সংবাদটি ৪১৯ বার পঠিত
মেহের নিগার তাজকিয়া , বার্মিংহাম, ইউকে থেকে : ‘ঊষারবাণী ডটকম.’ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন এর পিতা মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মানুষ গড়ার কারিগর বৃটিশ শাসনামলের সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গর্বিত যুদ্ধা মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানের ৩১ তম মৃত্য বার্ষিকি ছিল আজ।
আজীবন মানুষের জন্য নিরলস পরোপকারী সদা হাস্যোজ্বল জনবান্ধব মরহুম মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানের মৃত্যু বার্ষিকি উপলক্ষে মরহুমের বাড়ী ভাটেরা ইউনিয়নের কলিমাবাদ গ্রামে এবং ‘ঊষারবাণী’ পত্রিকা কার্যালয়ে পৃথক পৃথক দোয়া, আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন, ভাটেরা বাজার জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মৌলানা হিফজুর রহমান সিদ্দেকী, ভাটেরা কওমী মাদ্রাসার সুপার হাফেজ মৌলানা ফয়জুল ইসলাম সিদ্দেকী, মৌলনা মুহিবুর রহমান, কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামিলিগ নেতা ও সাবেক ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি লিকছন চৌধুরী এবং মরহুমের পরিবারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, মরহুমের জৈষ্ঠ্য সন্তান আওলাদ হোসেন, মেঝ সন্তান শামছুল হোসেন, চতুর্থ সন্তান কামরুল হোসেন, ৫ম সন্তান লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নজমূল হোসেন এবং কনিষ্ঠ সন্তান ঊষারবাণী ডটকম পত্রিকার সম্পাদক ও কুলাউড়া এম এ গণি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য যে, মরহুম মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের ‘বাদে ভূকশিমইল গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত উচ্চ শিক্ষিত পরিবারে ১৯১০ সালের ৪ঠা এপ্রিল জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর পিতা এতদঅঞ্চলের বিখ্যাত সমাজসেবক মরহুম মৌলানা মাওন নাঈম ও মাতা মরহুমা নকিজা বানু।
তিনি ১৯২১ সালে বাদে ভুকশিমইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। ১৯২৪ সালে তিনি তৎকালীন কুলাউড়া নবীন চন্দ্র স্কুল থেকে (বর্তমানে নবীন চন্দ্র সরকারী মডেল হাইস্কুল) ১ম বিভাগে মাইনর পাশ করেন। ১৯২৭ সালে তিনি তৎকালীন ভারতের ধর্মনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশিকার ছাত্র থাকা অবস্থায় বৃটিশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৩৮ সালে তিনি বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় থাকার অভিযোগে চাকুরিচ্যুত হন। কিন্তু দেশ বিভাগের পরপরই ১৯৪৮সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী সেনাবাহিনীতে চাকুরীকালীন সহকর্মী লেফেটেনেন্ট কর্ণেল আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরীর সাথে এদেশে প্রথম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট পদাথিক বাহিনী গঠনকালে তিনি প্রত্যক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁর অধীনে চাকুরীকালীন প্রশিক্ষণ গ্রহনকারী সেনা সদস্য যারা পরবর্তীকালে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দান সহ দেশের চৌকস সেনা সদস্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘঠে তাদের অন্যতম বীর মুক্তিযুদ্ধা মেজর আমিন হোসেন ও স্বর্ণ পদক জয়ী মুক্তযুদ্ধা ক্যাপ্টেন তাহেরআলী বীর বিক্রম।
১৯৫০ সালের পর হতে বেশ কয়েক বছর তিনি ব্যবসায়কে পেশা হিসেব চালিয়ে গেলেও একপর্যায়ে পাকিস্থান পিরিয়ডে ফেঞ্চুগঞ্জের তৎকালীন পিআইডিসি সার কারখানার একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরি করেন। জীবনে প্র্যাকটিক্যাল মেধার মাধ্যমে একসময় এতদঅঞ্চলে একজন সুনামধন্য ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে আত্মপ্রকাশ ঘটে তাঁর।
তিনি নিজ এলাকার অজ্ঞতা দূরীকরনের জন্য তার সহোদর বড় ভাই এতদোঞ্চলের অত্যন্ত সুনামধন্য শিক্ষাবিদ জালালপুর স্কুলের প্রতিষ্টাকালীন প্রধান শিক্ষক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফেঞ্চুগঞ্জবাজার বণিক সমিতির আজীবন সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান মাস্টার সাহেবের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এক পর্যায়ে শিক্ষকতা পেশায় আত্ম নিয়োগ করেন। তিনি একাধিক বার ভূকশিমইল ইউনিয়নের নমিনেটেড মেম্বার হিসাবে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (ততকালীন সরপঞ্চ) হিসেবেও দায়িত্বপালন করেন।
ব্যক্তিজীবনে বহুগুণের অধিকারী মরহুম আব্দুল মান্নান ৮পুত্র-কন্যা সন্তানের জনক। বড় সন্তান আওলাদ হোসেন পংকি, ২য় আলেয়া বেগম, ৩য় রাবেয়া বেগম, ৪র্থ সন্তান শামছুল হোসেন ৪০ বছর যাবত প্রবাসে চাকুরীরত, ৫ম বেলাল হোসেন তিনিও প্রবাসী,৬ষ্ট সন্তান কামরুল হোসেন একজন ব্যবসায়ী, ৭ম সন্তান অধ্যাপক নজমূল হোসেন লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের সুনামধ্য শিক্ষক এবং সিলেট শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অভিজ্ঞ পরীক্ষক এবং সর্ব কনিষ্ট সন্তান মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন ইউছুফ গণি আদর্শ কলেজের একজন সুনামধন্য অধ্যাপক এবং সিলেট শিক্ষাবোর্ডের ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অভিজ্ঞ পরীক্ষক তা ছাড়াও তিনি ‘ঊষারবাণী ডটকম’ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক,‘দৈনিক সংবাদ’ পত্রিকার কুলাউড়া দায়িত্বশীল, মানবতার জন্য ভাসানী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক ও হাওর বাঁচাও কৃষক বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের কুলাউড়া উপজেলা সভাপতি এবং কবি,সাাহিত্যিক ও লেখক পরিষদ মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহসভাপতি।
কুলাউড়া অঞ্চলের এককালীন ক্ষণজন্মা অসাধারণ প্রতিভাধর মরহুম আব্দুল মান্নানের মৃত্যুবার্ষিকি উপলক্ষে মরহুমের পরকালীন সর্বময় সুখ ও মঙ্গল কামনা করে দোয়া ও শুভকামনা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের এটর্ণি জেনারেল ও বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের বারকাউন্সিল সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবি এ.এম.আমিন উদ্দিন, কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ এ.কেএম.শফি আহমদ সলমান, কুলাউড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আলহাজ শফিআলম ইউনুছ, ভূকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির, কাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমদ গিলমান, ভাটেরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ এ.কেএম.নজরুল ইসলাম, ‘ঊষারবাণী ডটকম’ পত্রিকার সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য মরহুমের ভাতিজা মাহবুব মোরশেদ খসরু, ইয়াকুব তাজুল মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় সহ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আতাউর রহমান, ইউছুফ-গণি আদর্শ কলেজের অধ্যাপক ডাঃ আব্দুন নুর, কুলাউড়া দক্ষিণবাজর জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মাহবুব হাসান, ভাটেরা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব হাফিজ হিফজুর রহমান, কুলাউড়া উপজেলা জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন মাওলানা আহমেদ আলী, কুলাউড়া উপজেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি ও হাওর বাঁচাও কৃষক বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের কুলাউড়া উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আফতাব উদ্দিন আহমদ, কুলাউড়া উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি আব্দুল কাদির, ব্রাহ্মনবাজার ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি লিকছন চৌধুরী, ভূকশিমইল ইউনিয়ন কৃষকলীগ সভাপতি জহিরুল ইসলাম হাকিম সহ আরো অনেকে।