এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া কেউ নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না বলে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
বুধবার (১২ মার্চ) বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি সাথীকা হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে আদালত জানিয়েছেন, অতীতে যারা এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে ১৩ মার্চ থেকে কেউ আইন ভেঙে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৩ সালে ডিএমএফ ডিগ্রিধারী সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারদের (স্যাকমো) কয়েকজন বিএমডিসি আইনের বিরুদ্ধে আদালতে রিট করেন, যাতে তারা নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারেন। ওই বছরের ৩০ এপ্রিল প্রথম শুনানি হয় এবং পরবর্তী সময়ে মামলাটি ৬৭ বার কজ লিস্টে আসে, তবে দীর্ঘদিন চূড়ান্ত শুনানি হয়নি।
সর্বশেষ, ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার সংক্রান্ত ২৭৩০/২০১৩ এবং ‘বিএমডিসি অ্যাক্ট ২০১০-এর ধারা ২৯’ চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা ১৩০৪৬/২০২৪ রিটের শুনানি হয়। এটি ছিল মামলার ৯১তম শুনানি। এরপর আদালত রায় ঘোষণার জন্য ১২ মার্চ দিন নির্ধারণ করেন।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে ঢাকা ও দেশের অন্যান্য স্থান থেকে চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা সমাবেশে যোগ দেন। তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অভিমুখে পদযাত্রা করার কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের সব মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।
এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোর সেবাও বন্ধ রাখা হয়েছে। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, বৈকালিক সেবাও বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি বিভাগ, আইসিইউ, সিসিইউ, ক্যাজুয়ালটি বিভাগ, ভর্তি ইউনিট ও প্রসূতি সেবা চালু থাকবে।
চিকিৎসকদের দাবি, এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য জনসাধারণকে অপচিকিৎসার হাত থেকে রক্ষা করা, স্বাস্থ্যখাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং চিকিৎসা পেশার মর্যাদা রক্ষা করা। তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অনিয়মের প্রতিবাদ জানিয়ে পাঁচ দফা দাবির বাস্তবায়ন চাইছেন।