কোপা আমেরিকার প্রস্তুতিতে ইকুয়েডরের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচটি লিওনেল মেসির ফিরে এসের ম্যাচও হত। এল সালভাদর এবং কোস্টারিকার বিপক্ষে সর্বশেষ দুটি প্রীতি ম্যাচে চোটের কারণে মেসি খেলতে পারেননি। তবে, এই মহাতারকার মাঠে নামা নিশ্চয়তা আগেই দিয়েছিলেন কোচ লিওনেল স্কালোনি।
ধারাবাহিকতাতে, দ্বিতীয়ার্ধের ৫৬ মিনিটে দর্শকদের উল্লাসের মধ্যে মাঠে নামলেন মেসি। প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে মেসি গোল করেননি, তবে আর্জেন্টিনা জয় পেয়েছে। আর্জেন্টিনার মহাতারকা মাঠে নামার আগেই জয়সূচক গোলটি করেন অভিজ্ঞ উইঙ্গার আনহেল দি মারিয়া। তাঁর ৪০ মিনিটের গোলটি ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। ম্যাচে ১-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ইকুয়েডর সর্বশেষ জয় পেয়েছিল ৯ বছর আগে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের সেই ম্যাচের পর এ নিয়ে ইকুয়েডর ৭ ম্যাচ খেললেও কোনোটিতে জিততে পারেননি, শুধু একটি ম্যাচে ড্র করেছে।
আজ শিকাগোর সোলজার ফিল্ড স্টেডিয়ামে ৪-৩-৩ ক্লাসিক ফরমেশনে ম্যাচ শুরু করে আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে, ইকুয়েডর ৩-৩-২-২ ফরমেশনে শুরু করেছে। তবে, বিভিন্ন সময়ে রক্ষণে শক্তি বাড়ানোর জন্য ৩-৫-২ ফরমেশনে খেলতে দেখা গেছে তাদের।
এদিন প্রথম মিনিট থেকেই আনহেল দি মারিয়া ও হুলিয়ান আলভারেজকে হাইপ্রেস করে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে দেখা গেল। অন্যদিকে শক্তিশালী লো ব্লক তৈরি করে আর্জেন্টিনা আক্রমণ ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করল ইকুয়েডর। পাশাপাশি পাল্টা আক্রমণেও চোখ পড়েছিল ইকুয়েডরের দিকে। ১০ মিনিটে একটি সুযোগ পাওয়ার চেষ্টা করল তারা, তবে সেই প্রচেষ্টা কোনো মূল ফলাফলে উঠেনি। প্রীতি ম্যাচ হওয়ার পরও ধীরে ধীরে ম্যাচের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলো। দুই দলের মধ্যে হুটহাট পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তবে এটা বড় সমস্যা তৈরি করেনি। ১৯ ও ২১ মিনিটে পরপর আর্জেন্টিনা দুটি সুযোগ তৈরি করল, তবে সেগুলো গোলে পরিণত হয়নি।
দ্বিতীয় হাফে থেকেই সাইডলাইনের কাছাকাছি অনেক জায়গায় গা গরম হচ্ছে আর্জেন্টিনা ফুটবলারদের। এই সময়েও মাঠের খেলায় দাপট ছিল তারা। তারা বারবার ইকুয়েডরকে আক্রমণ করছিলেন এবং ৪৯ মিনিটে অসুযোগ তৈরি করেছিলেন। তবে তাদের এবারো দ্বিতীয় গোলের সফলতা পাওয়া হয়নি। ৫৬ মিনিটে দর্শকদের হর্ষধ্বনির মধ্যেই মেসি মাঠে প্রবেশ করেন, দি মারিয়া এর বদলে।
অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নেমে চেষ্টা করছিলেন আর্জেন্টিনা। তাঁর পায়ে বল জড়িয়ে উঠতেই স্টেডিয়ামের সমস্ত অংশেই ‘মেসি, মেসি’ ধ্বনি গুঞ্জিত হচ্ছিল। ইকুয়েডর চেষ্টা করে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে ম্যাচে সমতা ফেরাতে। তবে, আর্জেন্টিনার শক্ত রক্ষণদেয়াল তাদের প্রতি আক্রমণগুলি পেরতে ব্যর্থ করে। ইকুয়েডর এ সময় কিছুটা আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে দাপট কমিয়ে আসে আর্জেন্টিনার। তবে, শেষ পর্যন্ত এক গোলের লিড ধরে রাখে তাদের এবং জয় নিয়ে মাঠ থেকে পালিয়ে যায়।
কোপা আমেরিকার প্রস্তুতিতে আর্জেন্টিনা পরের ম্যাচ খেলবে ১৫ জুনে গুয়েতেমালার বিপক্ষে। এরপর ২১ জুনে কানাডার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আর্জেন্টিনা কোপা অভিযান শুরু করবে। ২৬ জুনে চিলির বিপক্ষে এবং ৩০ জুনে পেরুর বিপক্ষে আর্জেন্টিনা গ্রুপ পর্বের বাকি ২টি ম্যাচ খেলবে।