বাংলাদেশের বাজারে ইতোমধ্যে গাছপাকা রসালো আম ওঠা শুরু হয়েছে। পাকা আমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি, শর্করা, আমিষ, ভিটামিন এ, বিটা ক্যারোটিন, পটাশিয়াম ইত্যাদি থাকে। তাই কাঁচা আমের তুলনায় পাকা আম শরীরের জন্য বেশি ভালো। পাকা আমে প্রচুর পরিমাণে আঁশজাতীয় উপাদান পেকটিন থাকে, যা খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে।
এছাড়া, আমে থাকা বিশেষ কিছু এনজাইম প্রোটিনকে ভালোভাবে ভেঙে খাদ্য পরিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে। আমে থাকা ভিটামিন সি, ভিটামিন এ ও অন্যান্য ২৫ ধরনের ক্যারোটেনয়েডস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। বিশেষ করে, ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে ও চোখের শুষ্কভাব দূর করে।
আমের ভিটামিন এ এবং ই আমাদের ত্বক ভালো রাখে এবং এটি খেলে চোখের দৃষ্টিশক্তিও ভালো থাকে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন মানুষের শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী তিনি কতটুকু আম খেতে পারবেন তা নির্ভর করে। পুষ্টিবিদ মিজ তাসনিমের মতে, একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ দৈনিক অনায়াসে দুইটি আম খেতে পারেন।
বিশেষ করে ফজলি আম খাওয়াটা ভালো, কারণ এতে ভিটামিন এ, পটাশিয়াম এবং বিটা ক্যারোটিনের পরিমাণ বেশি। তবে যারা কিডনি বা ডায়াবেটিসের রোগী, তাদের জন্য আম খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা ভালো। কিডনি রোগীদের ডাক্তার ও পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করে আম খাওয়া উচিত, কারণ আমে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের প্রস্তাব অনুযায়ী ১৯ থেকে ৬৪ বছর বয়সী পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৪০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি প্রয়োজন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত খাদ্যতালিকায় এটি ৬০ মিলিগ্রাম। যেহেতু এক কাপ আমে প্রায় ৬০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে, সেহেতু অন্য কোনো জটিলতা না থাকলে একজন সুস্থ মানুষ এই পরিমাণ আম খেতেই পারেন।
তবে, আমের ক্যালরি এবং শর্করা তুলনামূলকভাবে বেশি। যদি কেউ সারাদিনের মোট ক্যালরি চাহিদার বেশি আম খান, তাহলে তা শরীরে চর্বি হিসেবে জমতে পারে, যার ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।