ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ মুরাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যাত্রা
মো. মুরাদ ইসলাম (৪১), যিনি গুলশানের ক্যাফে রিও-তে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন, স্বৈরশাসকের গুলিতে জীবনযুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছেন। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে গড়ে তোলা তার সুখের সংসার এখন অসহায়ত্বে ভরপুর।
২০২৪ সালের ১৮ জুলাই রাতে মিরপুরের সেনপাড়া এলাকায় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন মুরাদ। অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথে এ হামলায় তার গলার ডান পাশে গুলি ঢুকে বাম পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে দুজন নিহত হলেও ভাগ্যক্রমে মুরাদ বেঁচে যান। তবে গুলির আঘাতে তার শরীরের নিম্নাংশ সম্পূর্ণ অবস হয়ে যায়।
বর্তমানে মুরাদ তিন মাস ধরে রাজধানীর নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার হাত-পা সচল করতে রোবোটিক ফিজিওথেরাপি প্রয়োজন, যা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। এজন্য তাকে থাইল্যান্ডের ভেজথানি হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মুরাদের স্ত্রী রানী ইসলাম বলেন, “মুরাদের ইনকাম তিন মাস ধরে বন্ধ। ছেলেকে হাফেজ বানানোর স্বপ্ন ছিল তার। এখন সে কেবল কাঁদে আর বলে, আমি কীভাবে আমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ব?”
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সরাসরি তত্ত্বাবধানে মুরাদের বিদেশে চিকিৎসার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ বিমানের বিজি ৩৮৮ ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশ্যে তাকে পাঠানো হবে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাবেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান এবং নাগরিক কমিটির নেতা ডা. আহাদ।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, “আমার প্রধান কাজ হচ্ছে আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা। এরই মধ্যে ৫ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে। আরও কয়েকজনকে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। তবে শুধুমাত্র তাদের পাঠানো হবে যাদের দেশে চিকিৎসা সম্ভব নয়।”