যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে তাদের দূতাবাস বন্ধ ঘোষণা করেছে। মার্কিন দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে, বড় ধরনের বিমান হামলার সম্ভাবনা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার, মার্কিন দূতাবাসের এক নিরাপত্তা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দূতাবাস বন্ধ রাখা হয়েছে এবং কর্মীদের তাদের অবস্থান থেকে সরে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, বিমান হামলার সতর্কতা জারি হলে মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বুধবার ভোরে কিয়েভে রুশ ড্রোন হামলা চালানো হয়। কিয়েভ সিটি মিলিটারি প্রশাসনের প্রধান সেরহি পপকো জানিয়েছেন, হামলার ধ্বংসাবশেষ শহরের ডনিপ্রোভস্কি এলাকায় পড়েছে। তিনি একটি টেলিগ্রাম বার্তায় জানান, “ড্রোন হামলায় একটি বহুতল আবাসিক ভবনের অ্যাপার্টমেন্টে আগুন ধরে গেছে। হতাহতের সংখ্যা এখনও যাচাই করা হচ্ছে।”
সম্প্রতি রাশিয়ার ড্রোন হামলায় কিয়েভে এক ডজনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ইউক্রেনজুড়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় ব্যাপক ক্ষতির কারণে ব্ল্যাকআউট হচ্ছে।
ইউক্রেনের পাল্টা হামলার পরিস্থিতি
সম্প্রতি, ইউক্রেন প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত ATACMS ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে একটি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। এর পর রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার পারমাণবিক নীতিতে পরিবর্তন এনে সীমা কমিয়ে দিয়েছেন।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, যদি কোনো পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশের সহযোগিতায় কোনো অ-পারমাণবিক দেশ রাশিয়ার ওপর আক্রমণ চালায়, রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।
মার্কিন দূতাবাসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, কিয়েভে মার্কিন দূতাবাস বন্ধের সিদ্ধান্ত পুতিনের নীতিগত পরিবর্তনের কারণে নয়, বরং চলমান বিমান হামলার হুমকির জন্য এটি নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, দূতাবাসের কর্মীরা দূর থেকে কাজ চালিয়ে যাবেন।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যে বলা হয়েছে, গতরাতে রুশ বাহিনী ৪৪টি ইউক্রেনীয় ড্রোন প্রতিহত করেছে, যার মধ্যে তিনটি ড্রোন বেলগোরদ সীমান্ত অঞ্চলের আকাশে ধ্বংস করা হয়। ইউক্রেনের দাবি, তারা ওই অঞ্চলে একটি রুশ কমান্ড পোস্টে আঘাত হেনেছে।
বর্তমান পরিস্থিতি যুদ্ধক্ষেত্রে উত্তেজনা আরও বাড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে।