যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত দাবি, “শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী” সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের কোন সাক্ষাৎকারে এমন কোনো মন্তব্য করেননি, বিশেষ করে বাংলাদেশ বা শেখ হাসিনাকে নিয়ে।
২০ নভেম্বরের এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক মাধ্যমে এমন একটি পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দাবি করা হয় যে ট্রাম্প সম্প্রতি একটি পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।” কিন্তু, এই দাবি পুরোপুরি মিথ্যা। ট্রাম্প ওই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের প্রসঙ্গে কিছুই বলেননি।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, এ ধরনের মিথ্যা খবরটি মূলত শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ছড়াতে থাকে। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়, ট্রাম্প বলেছিলেন, “শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি, তাই তিনি এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।” এই দাবির সাথে কিছু ছবি জুড়ে দেওয়া হয়েছিল, যেখানে ট্রাম্প পিবিডি পডকাস্টের উপস্থাপক প্যাট্রিক বেট-ডেভিডের সাথে আলোচনা করতে দেখা যায়, এবং ছবির উপরে লেখা ছিল, “আমি মনে করি হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী: ট্রাম্প।”
এএফপির ফ্যাক্ট চেক বলছে, এই দাবি কোনভাবেই সত্য নয়। ট্রাম্প কখনো এমন কোন মন্তব্য করেননি। ৭ অক্টোবর ২০২৩-এ ট্রাম্প একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন, যা পিবিডি পডকাস্টে প্রকাশিত হয়েছিল, এবং সেখানে বাংলাদেশ বা শেখ হাসিনাকে নিয়ে কোন মন্তব্য ছিল না।
তবে, ৩১ অক্টোবর ২০২৩-এ, ট্রাম্প বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন, যেখানে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু, এই পোস্টে শেখ হাসিনার পদত্যাগ বা তার সরকারের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি তিনি।
এটি স্পষ্ট যে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ট্রাম্পের বক্তব্যের মতো মিথ্যা দাবিগুলো প্রকৃত ঘটনা থেকে অনেক দূরে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার মধ্যেই এসব মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, বিভ্রান্তিকর তথ্য বা মিথ্যা খবর জনমনে ভুল ধারণা সৃষ্টি করতে পারে, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, সঠিক তথ্য যাচাই করার গুরুত্ব আরো বেড়ে গেছে, এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো খবরের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।