হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ধর্ষণ মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় মঙ্গলবার (২৫ জুন) নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এ আদেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী একেএম ওমর ফারুক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ধর্ষণ মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
পূর্বে, ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার এক নারীর দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় হেফাজতে ইসলামের তখনো যুগ্ম-মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হকের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। ওই মামলায় তিনি গ্রেফতার হওয়া আগে প্রায় তিন বছর ধরে কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন।
২০২১ সালের ৩ এপ্রিল, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় রয়েল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণা নামে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করতেন হেফাজতে ইসলামের তখনো যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এসে তার নারীর সঙ্গে ঘেরাও করে রাখেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা গিয়ে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করে মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
ঘটনার পর থেকেই মামুনুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করছিলেন। এ সময় থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা মামুনুল হককে নজরদারিতে রাখে।
ঘটনার পনেরো দিন পরে, ওই বছরের ১৮ এপ্রিল, মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে মামুনুল হককে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় ৩০ এপ্রিলে সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে রিসোর্টে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ তুলে মামলা করেন ওই নারী। তবে মামুনুল হক ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেও তার আইনজীবীরা এখনো প্রামাণিক কোনো বৈধ তথ্য উপস্থাপন করতে পারেননি।
ধর্ষণ মামলার বাদী সাক্ষ্য প্রদানের সময়ও ওই নারী আদালতে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সোনারগাঁ রয়েল রিসোর্টে নিয়ে একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করার কথা স্বীকারও করেছেন। আদালতে তার দেয়া ওই সাক্ষ্য নথিভুক্ত করা আছে। এছাড়া, বাদী পক্ষের আইনজীবী আসামি মামুনুল হককে আদালতে জেরা করার সময় মামুনুল হক ওই নারীকে মৌখিকভাবে বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেছেন। তবে তাঁর কোনো কাবিননামা নেই বলে অবস্থান করেছেন। তখন ইসলামি শরীয়তের বিধান অনুযায়ী কাবিননামা ছাড়া মৌখিকভাবে কোনো বিয়ে বৈধ হয় না এবং এ সংক্রান্ত বৈধ প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করেছেন।