শিরোনাম

কর্মবিরতি প্রত্যাহার, মেট্রোরেলের টিকিট ব্যবস্থা চালু

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২১ ঘন্টা আগে
ফাইল ছবি

কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পর প্রায় দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর মেট্রোরেলের কর্মীরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে টিকিট বিক্রি পুনরায় চালু করেছেন।

সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে তারা স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে আসেন।

এর আগে, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চারজন কর্মী এমআরটি পুলিশের দ্বারা মৌখিক ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় মেট্রোরেল কর্মীরা কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। ফলে সকাল থেকে মেট্রোরেল পরিচালনায় কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। বিশেষ করে, টিকিট কাউন্টার বন্ধ থাকায় অনেক যাত্রী টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি, যার ফলে শুধুমাত্র এমআরটি ও র‍্যাপিড পাসধারীরাই যাতায়াত করতে পেরেছেন।

রোববার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাতে ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এক বিজ্ঞপ্তিতে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৬ মার্চ বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ডিএমটিসিএলের চারজন কর্মী এমআরটি পুলিশের হাতে মৌখিক ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন, যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য।

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে দুজন নারী কোনো পরিচয়পত্র ছাড়াই সিভিল পোশাকে বিনা টিকিটে মেট্রোরেলে যাত্রা করেন এবং ইএফও অফিসের পাশে থাকা সুইং গেট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। যেহেতু তারা নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিহিত ছিলেন না এবং তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি, দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআরএ নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে নির্ধারিত প্রবেশপথ ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করেন।

এতে সংশ্লিষ্ট পুলিশের সদস্যরা ক্ষুব্ধ হয়ে তর্কে লিপ্ত হন এবং একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান। পরে আরও দুইজন এপিবিএন সদস্য একইভাবে সুইং গেট ব্যবহার করে বের হয়ে যান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা পূর্বের ঘটনার জের ধরে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেন। কিছুক্ষণ পর কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে দায়িত্বরত সিআরএর সঙ্গে তর্কে জড়ান এবং বের হওয়ার সময় এক কর্মীর কাঁধে বন্দুক দিয়ে আঘাত করেন। এছাড়াও, এক টিএমও-র শার্টের কলার ধরে তাকে এমআরটি পুলিশ বক্সে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয় এবং বন্দুক তাক করে গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়।

উপস্থিত স্টেশন কর্মী ও যাত্রীরা দ্রুত ঘটনাটি বুঝতে পেরে টিএমও-কে উদ্ধার করেন। এমন ঘটনা কর্মপরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এ ঘটনায় আহত কর্মী (যিনি বন্দুকের আঘাতে আহত হন) তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে, টিএমও (যাকে পুলিশ হুমকি দেয়) বাসায় ফেরার পথে অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারান।

মেট্রোরেল কর্মীদের ৬ দফা দাবি:

1) এক কার্যদিবসের মধ্যে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য (এসআই মাসুদ)কে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে হবে এবং ঘটনায় জড়িত অন্যান্য পুলিশ সদস্যদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি, তাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

2) মেট্রোরেল, কর্মী ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গঠন করতে হবে।

3) এমআরটি পুলিশের কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

4) স্টেশনে কর্মরত সকল কর্মীর শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

5) অফিসিয়াল পরিচয়পত্র ছাড়া বা অনুমতি ছাড়া কেউ যেন স্টেশনের পেইড জোনে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

6) আহত কর্মীর চিকিৎসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে।