শিরোনাম

দেশের অর্থনীতি পাল্টাতে চট্টগ্রাম বন্দরই আমাদের ভরসা : প্রধান উপদেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ মাস আগে
ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে চট্টগ্রাম বন্দর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। এই বন্দরকে উপেক্ষা করে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, বন্দরের কার্যক্রম যত বেশি মুক্ত ও কার্যকর হবে, অর্থনীতিও তত বেশি গতিশীল হবে। অন্যথায়, অর্থনৈতিক অগ্রগতি কেবল চেষ্টার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

বুধবার (১৪ মে) চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি-৫ এলাকায় আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস চট্টগ্রাম বন্দরকে জাতীয় অর্থনীতির হৃদপিণ্ড হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, যদি হৃদপিণ্ড দুর্বল থাকে, তাহলে শরীর ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। তেমনই, এই বন্দর যদি পিছিয়ে পড়ে, তবে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নও থমকে যাবে। তিনি বলেন, বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হবে, যাতে এখান থেকে রপ্তানি ও আমদানির প্রক্রিয়া আরও সহজ ও দক্ষ হয়।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন এতদিনেও চট্টগ্রাম বন্দরের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসেনি? বিশ্বব্যাপী যখন প্রযুক্তি ও অবকাঠামোতে দ্রুত অগ্রগতি হচ্ছে, সেখানে বন্দরের উন্নয়ন কেন এত ধীরগতি? দীর্ঘদিন চট্টগ্রামবাসী হিসেবে তিনি বন্দর এলাকায় যানজট, পণ্য খালাসে ধীরগতি ও অব্যবস্থাপনার চিত্র দেখে এসেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এসব সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে মনোযোগ দিয়েছেন।

এর আগে সকালেই চট্টগ্রামে পৌঁছান ড. ইউনূস। সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই তার প্রথম চট্টগ্রাম সফর। চট্টগ্রামের সন্তান হিসেবে নিজ এলাকায় আগমনে স্থানীয়দের কাছ থেকে তিনি উষ্ণ অভ্যর্থনা পান।

বন্দর পরিদর্শনের পর তিনি সার্কিট হাউসে যান এবং কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিতব্য কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এছাড়া তিনি চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন এবং অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। একই স্থানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের জন্য বরাদ্দকৃত ২৩ একর জমির দলিল হস্তান্তর করেন তিনি।

দুপুরে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে রওনা হন। বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে ২০১১ থেকে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ২২ হাজার ৬০০ শিক্ষার্থীকে সনদ প্রদান করা হয় এবং ২০১৫ থেকে ২০২৫ সময়কালের মধ্যে অর্জিত গবেষণার ভিত্তিতে ২২ জন শিক্ষার্থীকে পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া হয়। দারিদ্র্য বিমোচন ও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ড. ইউনূসকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি প্রদান করে।

সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে ড. ইউনূস হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে তার পৈতৃক বাড়িতে যান। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তিনি আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সময় কাটান। এরপর সন্ধ্যায় তিনি চট্টগ্রাম ত্যাগ করেন।