মাগুরায় বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার আট বছর বয়সী শিশু আছিয়া হত্যামামলায় প্রধান আসামি হিটু শেখকে (বোনের শ্বশুর) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
শনিবার (১৭ মে) সকালে মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এই মামলার রায় দেন। রায়ে প্রধান আসামি হিটু শেখকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও, তার স্ত্রী জাহেদা বেগম এবং দুই ছেলে সজীব শেখ ও রাতুল শেখকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
রায়ের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিযুক্ত বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের মর্যাদাসম্পন্ন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী।
মাত্র ২১ দিনের মধ্যেই এই আলোচিত মামলার বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পুলিশ ১৩ এপ্রিল মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে এবং ২৩ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়। ২৭ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের ভাষ্য অনুযায়ী, আসামি আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন এবং সাক্ষীদের জবানবন্দির মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
৬ মার্চ মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয় শিশুটি। তাকে প্রথমে মাগুরা ও পরে ফরিদপুরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মার্চ তার মৃত্যু হয়। এই নির্মম ঘটনায় দেশজুড়ে চরম ক্ষোভ দেখা দেয়।
৮ মার্চ শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। পরে ১৫ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায়ের আদালতে হিটু শেখ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
৬ মার্চের ঘটনার ৭৩ দিনের মাথায় মামলার রায় ঘোষণা করা হলো। এর মধ্যে তদন্ত শেষে মাত্র ৩৭ দিনেই পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।