শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ এবং সহ-উপাচার্য অধ্যাপক এস কে শরীফুল আলম তাদের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের পদত্যাগপত্র গ্রহণের প্রক্রিয়া বর্তমানে চলমান রয়েছে।
এর আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, কুয়েটের সাম্প্রতিক অস্থির পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট সংকট সমাধান এবং শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত সচল করার লক্ষ্যে উপাচার্য ও প্রো-ভিসিকে দায়িত্বমুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিগগিরই একটি সার্চ কমিটি গঠন করে উক্ত পদগুলোতে নতুন নিয়োগ দেওয়া হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল রাখতে জ্যেষ্ঠ কোনো অধ্যাপককে অস্থায়ীভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও যুবদলের কর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হন। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হলসমূহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ১৩ এপ্রিল ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। পরদিন রাতে অনুষ্ঠিত ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।
উপাচার্যকে অপসারণ এবং শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ বাতিলের দাবিতে ২২ এপ্রিল বিকেল থেকে ২৯ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করেন। তাদের এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে যুক্ত হন। অবশেষে উপাচার্যের পদত্যাগের মাধ্যমে আন্দোলনের প্রধান দাবি পূরণ হলে শিক্ষার্থীরা ৫৮ ঘণ্টা পর অনশন কর্মসূচি শেষ করেন।
পরে, বুধবার দুপুরে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় বহিষ্কৃত ৩৭ শিক্ষার্থীর সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।