কারিগরি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের অন্যতম প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম জানিয়েছেন, “আজ আমরা অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলাম, কিন্তু এতে তেমন কোনো কার্যকর অগ্রগতি দেখতে পাইনি। আলোচনার ফলাফলে আমরা সন্তুষ্ট নই। তাই আমরা কঠোর কর্মসূচির দিকে অগ্রসর হব। আমাদের দাবিগুলো আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি অনুবিভাগ) রেহানা ইয়াছমিনের সভাপতিত্বে শুরু হয় বৈঠক। এতে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
আরেক প্রতিনিধি জোবায়ের পাটোয়ারী বলেন, “আমাদের এই আন্দোলন চলছে প্রায় আট মাস ধরে। আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে ফেলছি না। বরং আমাদের এই অবস্থায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে। সচিবালয়ে গিয়েও আমরা কোনো সমাধান পাইনি। আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। আজকের বৈঠকে অতিরিক্ত সচিব উপস্থিত থাকলেও, মূল শিক্ষা উপদেষ্টা অনুপস্থিত ছিলেন, যা আমাদের জন্য হতাশাজনক। আলোচনা কার্যকর না হওয়ায় আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান চাই। তবে সাধারণ মানুষের কষ্ট যাতে কম হয়, সে বিষয়টিও আমরা বিবেচনায় রাখছি।”
শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:
গত ১৬ এপ্রিল সকাল ১০টায়, রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। একই সময় সারাদেশের বিভিন্ন জেলায়ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়।
বিকেলে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শোয়াইব আহমাদ খান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি জানান, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতিতে আর কোনো কোটা রাখা হবে না।
তবে আশ্বাস সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যান। তারা জানান, প্রত্যেকটি দাবির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে লিখিত ব্যাখ্যা ও সময়সীমাসহ প্রতিশ্রুতি ছাড়া তারা কর্মসূচি থেকে পিছু হটবেন না।
ছয় দফা দাবির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ১৭ এপ্রিল সারা দেশে রেলপথ অবরোধ এবং অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। পরে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ ও আলোচনার প্রস্তাবনার পর আন্দোলন কিছুটা শিথিল করে তারা আলোচনায় বসেন। তবে শিক্ষার্থীরা সাফ জানিয়ে দেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।