বইমেলার প্রথম দিনে বাংলা একাডেমিতে স্থাপন করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংযুক্ত একটি ডাস্টবিনে ময়লা ফেলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। পরে সেই ছবি তিনি ফেসবুকে পোস্ট করলে তা ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। অবশেষে এই বিষয়টি নিয়ে নিজেই মুখ খুললেন তিনি।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন শফিকুল আলম।
তিনি লেখেন, “একুশে বইমেলা নিয়ে আমার ফেসবুক পোস্ট ঘিরে অনেক আলোচনা হয়েছে। তাই এ বিষয়ে পরিষ্কার বক্তব্য দেওয়া জরুরি বলে মনে করছি।”
তিনি আরও জানান, অন্তর্বর্তী সরকার কেবল তাদের অংশীদারদের প্রতি নিরপেক্ষ অবস্থান নেয়। যেসব শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক দল শুধু জুলাই অভ্যুত্থানে নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রেখেছে, তাদের সরকার অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে।
এ প্রসঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘কসাই’ আখ্যা দিয়ে তিনি লেখেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় যারা বিক্ষোভকারীদের হত্যা করেছিল, তাদের বিচারের আওতায় আনা অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি করা হবে।”
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, “রুচির সংজ্ঞা কী? শালীনতা নির্ধারণের মানদণ্ডই বা কী? আমাদের শালীনতা কাদের কাছে প্রদর্শন করা উচিত?”
তার মতে, শেখ হাসিনা বিশ্বের অন্যতম স্বৈরশাসক, যার শাসন ছিল নিষ্ঠুর ও দুর্নীতিগ্রস্ত। তিনি উল্লেখ করেন, “আমি জনগণকে বারবার মনে করিয়ে দিতে দ্বিধা করি না যে তিনি হত্যাকাণ্ড ও গুমের জন্য দায়ী ছিলেন। এটি নৈতিক অবস্থান থেকে বলা। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হলে, আমাদের অবশ্যই তার বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার থাকতে হবে। বাকস্বাধীনতা গণতন্ত্রের অন্যতম মূল ভিত্তি।”
শফিকুল আলম আরও লেখেন, “যারা আওয়ামী লীগের সমালোচনার মুখে পড়েছেন, তাদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি আরামদায়ক চাকরি ছেড়ে অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছি। আমার পোস্টের কারণে আপনাদের যদি বিপাকে পড়তে হয়, তাহলে চাইলে আমাকে আনফ্রেন্ড বা ব্লক করতে পারেন।”
শেষে তিনি লেখেন, “আমি যা করছি, তা সম্পর্কে সচেতন এবং এর পরিণতি মেনে নিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।”