শিরোনাম

সরকারি কর্মচারী অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৩ সপ্তাহ আগে
ছবি : সংগৃহীত

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর বিরুদ্ধে আজ সোমবার (২৬ মে) টানা তৃতীয় দিনের মতো আন্দোলনে নেমেছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সদস্যরা। এই অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালো আইন’ বলে আখ্যা দিয়ে সংগঠনটি এর অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে।

সকালে সচিবালয় ঘুরে দেখা গেছে, শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী দফতরের নিয়মিত কাজকর্ম বন্ধ রেখে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তাঁদের হাতে ছিল বিভিন্ন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড, যেখানে অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি লেখা ছিল। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর।

আন্দোলনকারীদের দাবি, প্রায় ৪৫ বছর আগের একটি বিশেষ বিধানের কিছু কঠোর ধারা যুক্ত করে নতুন এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হয়েছে, যা সরকারি কর্মচারীদের অধিকতর চাপের মুখে ফেলবে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’-তে পরিবর্তন এনে নতুন ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন করা হয়। এরপর রোববার রাতে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে জারি করা হয়।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের চার ধরনের আচরণকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে:

  1. কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য বা বিদ্রোহমূলক কাজ করা বা সেই ধরনের পরিবেশ তৈরি করা।
  2. যৌক্তিক কারণ ছাড়াই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা বা কাজে অনীহা দেখানো।
  3. অন্য কর্মচারীদের কর্মবিরতিতে উসকানি বা প্ররোচনা দেয়া।
  4. অন্য কর্মচারীদের কাজ করতে বাধা দেয়া।

এই অপরাধগুলোর জন্য শাস্তি হিসেবে অভিযুক্তকে পদাবনতি, চাকরি থেকে অপসারণ কিংবা বরখাস্ত করার সুযোগ রাখা হয়েছে।

এছাড়া, বিভাগীয় মামলা ছাড়াই দ্রুত শাস্তি প্রদানের বিধানও যুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ গঠনের সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং তার ভিত্তিতে দোষী প্রমাণিত হলে আরও সাত কর্মদিবসের মধ্যে শাস্তি আরোপের সুযোগ রাখা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে আপিল করতে পারবেন। তবে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না, কেবল পুনর্বিবেচনার আবেদন করা যাবে।

এই অধ্যাদেশ কার্যকরের প্রতিবাদ জানিয়ে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধারাবাহিকভাবে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন।