যৌথ বাহিনী ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গাজীপুরসহ সারাদেশে চলছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’। গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি) জানিয়েছে, এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ৪০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পর এ অভিযান শুরু হয়। হামলার পরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ চালুর ঘোষণা দেয়, যার অংশ হিসেবে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে যৌথ বাহিনী সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে চেকপোস্ট বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহন ও মোটরসাইকেলে তল্লাশি চালাচ্ছে সেনাবাহিনী।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার চৌধুরী যাবের সাদেক জানিয়েছেন, ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের অন্তত ৪০ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, শুক্রবার রাতে ধীরাশ্রমের দক্ষিণখানে আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ভাঙচুর হয়। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের কৌশলে বাড়ির ভেতরে ডেকে নেয় এবং পরে ‘ডাকাতির’ ঘোষণা দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। মুখোশ পরা হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের আঘাত করে।
এ ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হন। সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং আহতদের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গুরুতর আহত পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এই হামলার প্রতিবাদে শনিবার ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিল করে এবং জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি জানায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আলটিমেটাম দেন।
শনিবার রাতে বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ওপর মোটরসাইকেল আরোহীরা গুলি চালায়। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী মোবাশ্বের হোসেন গুলিবিদ্ধ হন। তাকে প্রথমে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ভুক্তভোগীর বন্ধুদের দাবি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই এ হামলার সঙ্গে জড়িত। তারা দ্রুত দোষীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন।