ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলা থামার কোনো লক্ষণ নেই। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় আরও ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
সোমবার (১৯ নভেম্বর) ইসরাইলি বাহিনীর আক্রমণে নতুন করে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। উদ্ধারকর্মীরা অনেক জায়গায় পৌঁছাতে না পারায় স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরাই আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত আক্রমণের পর থেকে ইসরাইল গাজায় বিমান এবং স্থল হামলা অব্যাহত রেখেছে। ইসরাইলি আক্রমণে হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ অসংখ্য ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রায় ২০ লাখের বেশি মানুষ বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, যা গাজাকে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৪৩ হাজার ৯২২ জন, আর আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৩ হাজার ৮৯৮-এ পৌঁছেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো প্রায় ১০ হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলের আক্রমণে গাজার ৮৫ শতাংশের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার বাসিন্দারা মারাত্মক মানবিক সংকটে রয়েছেন। এর পাশাপাশি গাজার ৭০ শতাংশেরও বেশি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।
ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে, ফিলিস্তিনিদের জন্য কাজ করা জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানিয়েছে, গাজায় প্রবেশের পর তাদের একটি ত্রাণবহরে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ১০৯টি ট্রাকের মধ্যে ৯৮টি ট্রাক লুট হয়ে গেছে। ইউএনআরডব্লিউএ একে সাম্প্রতিক যুদ্ধের সবচেয়ে ভয়াবহ লুটপাটের একটি ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছে।