বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে সরকার একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানিয়েছে।
এই ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়েও আলোচিত হয়। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তারা বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। তবে যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, ন্যায়সংগত বিচার এবং সবার জন্য উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ আইনগত পরিবেশকে সমর্থন করে।
স্থানীয় সময় ১৩ মে, মঙ্গলবার, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র টমাস “টমি” পিগট এ বিষয়ে বক্তব্য দেন।
ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নকারী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করা হয়েছে, যা দলটির অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে এবং ভবিষ্যতের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ রুদ্ধ করেছে। তিনি পূর্বের এক ব্রিফিংয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছিল।
জবাবে পিগট বলেন, “আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি—বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করেছে, যতক্ষণ না বিশেষ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণা করা হয়। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে এককভাবে সমর্থন করি না। আমরা এমন একটি রাজনৈতিক পরিবেশকে সমর্থন করি, যেখানে মতপ্রকাশ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং সংগঠনের অধিকার সকলের জন্য সুরক্ষিত থাকে।”
একই ব্রিফিংয়ে আরেকটি প্রশ্নে উঠে আসে, বাংলাদেশ সরকারের উগ্র মতাদর্শ ও সন্ত্রাসবাদে জড়িতদের প্রতি নীতিগত অবস্থান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কী মনে করে। প্রশ্নকারী দাবি করেন, বাংলাদেশ সরকারের একজন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল একটি বৈঠকে অংশ নিয়েছেন, যেখানে লস্কর-ই-তইয়্যেবা নামক একটি নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হারুন ইজহার উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও তিনি বলেন, কাশ্মির ইস্যুতে সহিংসতা উসকে দেওয়া কিছু রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতার প্রভাব বাংলাদেশে বাড়ছে, এবং এই বৈঠকটি একটি সরকারি মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এর জবাবে মুখপাত্র পিগট বলেন, “আমি আগের প্রশ্নে যে সার্বিক অবস্থান তুলে ধরেছি, সেটিই পুনরায় বলছি। আমরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের অংশীদারিত্বকে গুরুত্ব দিই এবং এটিকে আরও গভীর করতে চাই। সে লক্ষ্যে আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গেও কাজ করে চলেছি। এ বিষয়ে এর বেশি কিছু বলার নেই।”