ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় একদিনেই অন্তত ৫৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। এ নিয়ে চলমান সংঘাতে গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা ৫২ হাজার ২০০ ছাড়িয়েছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) আল জাজিরা ও আনাদোলু এজেন্সির পৃথক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনী টানা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে উভয় সংবাদমাধ্যম। গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল নতুন করে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে। এরপর থেকে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২১৫১ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। যদিও জানুয়ারিতে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছিল, তবে হামাসের সঙ্গে মতপার্থক্য ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার নিয়ে জটিলতার কারণে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে আবারও আক্রমণ শুরু হয়। এর ফলে যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় মোট ৫২ হাজার ২৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৬৩৯ জন আহত হয়েছেন। বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন, যাদের উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে। শুধু গত রবিবারেই নিহত হন ৫৩ জন এবং সোমবার ভোরে আরও ১৭ জনের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া পরিচয় যাচাই শেষে নতুন করে আরও ৬৯৭ জনের নাম মৃতের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্য বলছে, গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং উপত্যকার অধিকাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর আগে, ২০২৪ সালের নভেম্বরে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচারিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলা চলমান রয়েছে।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান আরও জোরালো হলেও, এখনো মানবিক সংকট ভয়াবহ রূপ ধারণ করে আছে। গাজার মানুষের প্রতি বৈশ্বিক সহানুভূতি ও জরুরি সহায়তার প্রয়োজন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় আরও বেশি।
তথ্যসূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, আল জাজিরা