গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক দিনে নিহত ৫১

ছবি : সংগৃহীত

ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর (আইএএফ) টানা বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ৫১ জন নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা ওয়াফার তথ্য উদ্ধৃত করে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।

ওয়াফার তথ্যানুসারে, সোমবার সকালেই গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস শহরে প্রথম হামলা চালানো হয়, যাতে ৯ জন প্রাণ হারান। একই সময় খান ইউনিসের নিকটবর্তী আল শরিফ শরণার্থী শিবিরেও হামলা হয়, সেখানে নিহত হন আরও ৪ জন।

গাজার কেন্দ্রীয় শহর গাজা সিটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ জন। তাদের মধ্যে ৯ জন শহরের কেন্দ্রীয় অংশের, ৩ জন দক্ষিণ গাজা সিটির এবং ৭ জন উত্তর গাজার বাসিন্দা। এছাড়া উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে নিহত হয়েছেন ১০ জন এবং বেইত লাহিয়া এলাকায় আরও ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। সোমবারের হামলা পর্যন্ত দেড় বছরে গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৩০০ জন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪১৬ জন। আহত ও নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৫৬ শতাংশ।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি গুলিতে ১২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় তারা।

এরপর থেকেই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। টানা ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলা অভিযানের পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়। তবে যুদ্ধবিরতির দুই মাস পার হওয়ার আগেই, ১৮ মার্চ জিম্মিদের মুক্তি এবং বন্দি বিনিময় নিয়ে মতবিরোধের কারণে আইডিএফ ফের সামরিক অভিযান শুরু করে। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে এখন পর্যন্ত ৩৮ দিনে গাজায় নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৬০ জন এবং আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৩৭৫ জন ফিলিস্তিনি।

হামাসের অপহৃত ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে এখনো অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইডিএফ ঘোষণা দিয়েছে, সামরিক অভিযান চালিয়েই তাদের উদ্ধার করা হবে।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। এমনকি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত গাজায় অভিযান চালিয়ে যাওয়া হবে।