শিরোনাম

পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করল ভারত, নিয়ন্ত্রণরেখায় ভয়াবহ সংঘর্ষ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ সপ্তাহ আগে
ছবি : সংগৃহীত

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) দাবি করেছে, তারা রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকা থেকে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করেছে। তবে ওই রেঞ্জারের পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

এই ঘটনার পরপরই কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যা সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক মুখোমুখি অবস্থান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

রোববার (৪ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শনিবার রাজস্থানে সীমান্ত এলাকা থেকে বিএসএফ ওই রেঞ্জারকে আটক করে। এর আগে ২৩ এপ্রিল পাকিস্তান পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সীমান্তে বিএসএফ সদস্য পূর্ণম কুমার সাহুকে আটক করেছিল, যিনি সেসময় কৃষকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।

আটক হওয়া পাকিস্তানি রেঞ্জার বর্তমানে বিএসএফের রাজস্থান ফ্রন্টিয়ারের হেফাজতে রয়েছেন। সাধারণত ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ভুল করে পার হওয়া সেনা সদস্যদের একে অপরের কাছে ফেরত দেওয়ার প্রথা চালু রয়েছে। তবে চলমান উত্তেজনার কারণে পাকিস্তান এখন পর্যন্ত সাহুকে ফিরিয়ে দেয়নি, ফলে ভারতের পক্ষ থেকেও পাকিস্তানি রেঞ্জারকে হস্তান্তরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটকের কিছুক্ষণ পরই নিয়ন্ত্রণরেখার বিভিন্ন সেক্টরে পাকিস্তানি বাহিনী গুলিবর্ষণ শুরু করে। এই হামলা চলতি ১০ দিনের সংঘর্ষের ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সূত্র জানায়, কাশ্মিরের কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধর, নৌশেরা, সুন্দরবানি এবং আখনুর সেক্টরজুড়ে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। ভারতও পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বলে দাবি করা হয়। এখনো পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।

এরই মধ্যে বিএসএফ সদস্য সাহুর মুক্তির জন্য একাধিক বৈঠক হলেও পাকিস্তান এখনো এ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত জানায়নি।

এমন সময় এই সংঘর্ষ ও উত্তেজনা চলছে, যখন কয়েকদিন আগেই কাশ্মিরের পেহেলগামে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর এটি অঞ্চলটিতে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এই হামলার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও অবনতি হয়েছে। ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়, যার জবাবে পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিত করে এবং নিজেদের আকাশসীমা ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য বন্ধ করার ঘোষণা দেয়।

এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তান শনিবার তাদের ‘আবদালি’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করে। ৪৫০ কিমি পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র ‘সিন্ধু মহড়া’র অংশ হিসেবে পরীক্ষা চালানো হয়েছে বলে জানায় পাকিস্তান। ভারতের কর্মকর্তারা একে ‘স্পষ্ট উসকানিমূলক পদক্ষেপ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।