শিরোনাম

সেনাঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর হামলা, ভয়ে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন ইসরাইলিরা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৩ মাস আগে

ইসরায়েলের গোলানি ব্রিগেড, যা দেশটির পাঁচটি পদাতিক বাহিনীর একটি, সম্প্রতি লেবাননের হিজবুল্লাহর একটি প্রাণঘাতী ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে। এই হামলা ইসরায়েলের জনগণ ও সরকারকে বিস্মিত করেছে। হামলাটি ঘটেছে দেশের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অবস্থিত এই অভিজাত ব্রিগেডের ঘাঁটিতে।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, রোববারের এই হামলায় চারজন ইসরায়েলি সেনা নিহত এবং ৬৭ জন আহত হয়েছেন।

হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, তারা ইসরায়েলের হাইফার দক্ষিণে বেনিয়ামিনা এলাকায় গোলানি ব্রিগেডের ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই আক্রমণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে গোষ্ঠীটি।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এ ঘটনায় চার সেনা নিহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে। গত ২৩ সেপ্টেম্বরের পর এটিই ইসরায়েলের কোনো ঘাঁটিতে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল দানিয়েল হাগারি জানিয়েছেন, তারা এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এটি তদন্ত করবেন।

হিজবুল্লাহর বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, তারা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ব্যস্ত রাখতে হাইফার উত্তরাঞ্চলের নাহারিয়া ও আকরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই সুযোগে ড্রোন হামলা পরিচালিত হয়। হিজবুল্লাহ এই আক্রমণকে ‘সমন্বিত অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

বেনিয়ামিনা এলাকা ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে এবং হাইফা থেকে ৩৩ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। এই অঞ্চলে হিজবুল্লাহর হামলা ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিস্মিত করেছে।

ঘটনার পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট গোলানি ব্রিগেডের ঘাঁটি পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, “আমরা অবশ্যই বিষয়টি তদন্ত করব এবং এর থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।” এছাড়া তিনি ড্রোন হুমকি মোকাবিলার জন্য একটি সমন্বিত ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথাও জানান।

দেশত্যাগ করছেন ইসরায়েলিরা

জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান সংঘাতের মধ্যে দেশ ছেড়ে যাওয়া ইসরায়েলিদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি দেশটিকে।

দেশত্যাগী ইসরায়েলিরা তাদের সম্পদও সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষিত ও দক্ষ জনবল দেশ ছাড়তে থাকায় দীর্ঘমেয়াদে ইসরায়েলের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের প্রথম সাত মাসে ৪০ হাজার ৬০০ ইসরায়েলি দেশ ছেড়েছেন। গত বছর ইসরায়েল ছেড়ে যাওয়া ৫৫ হাজার ৪০০ জনের তুলনায় এ বছর আরও বেশি মানুষ দেশ ছেড়েছেন। এছাড়া, প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৩৭ হাজার ১০০ ইসরায়েলি দেশত্যাগ করেন। তবে একই সময়ে ২৭ হাজার ৮০০ জন ইসরায়েলে ফিরে এসেছেন, যা আগের এক দশকের গড়ের তুলনায় বেশি।