মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের আগুন ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে। ইসরাইল-ইরান সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মধ্যেও যুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। ইরানে ইসরাইলের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ওয়াশিংটনও তেল আবিবের প্রতি সমর্থন জানানোর অঙ্গীকার করেছে। পালটা প্রতিক্রিয়ায় ইরানও হামলার হুমকি দিয়েছে। পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে পুরো মধ্যপ্রাচ্য বড় ধরনের সংঘাতের ঝুঁকিতে পড়তে পারে, যা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে।
ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের দামামা ইতিমধ্যেই বেজে উঠেছে। লেবাননের হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে ইরান ভয়াবহ আক্রমণ চালিয়েছে ইসরাইলের ওপর। তেহরান থেকে ইসরাইলের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এমনকি মোসাদের সদর দপ্তরও লক্ষ্যবস্তু ছিল, তবে তা অল্পের জন্য রক্ষা পায়। ইসরাইলের ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা না হলেও, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে ইসরাইলের স্কুল ও কিছু ভবনের ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র ফুটে উঠেছে।
ইরানের এ হামলার পর নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন, এর ফল ইরানকে ভোগ করতে হবে। সাবেক ইসরাইলি গোয়েন্দা কর্মকর্তা আভি মেলামেদের মতে, ইরানের এ হামলা ইসরাইলকে প্রতিশোধমূলক বড় আঘাত হানার প্ররোচনা দিচ্ছে। তিনি বলেছেন, শীঘ্রই ইসরাইল ইরানের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে জবাব দিতে প্রস্তুত। ইসরাইলের বর্তমান কৌশল হলো হত্যা, বিমান হামলা এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া, যা ইরানকে বোঝাবে যে তারা ইসরাইল আক্রমণ করলে আরও ভয়ানক প্রতিক্রিয়া পেতে হবে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরাইল তাদের প্রতিশোধের অংশ হিসেবে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর আঘাত হানার পরিকল্পনা করেছে। ইসরাইলের গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হতে পারে। তবে ইরানের সামরিক প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইসরাইল যদি পাল্টা প্রতিশোধের চেষ্টা করে, তবে ইরানের পক্ষ থেকে আরও বড় আক্রমণের মুখোমুখি হতে হবে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রও ইরানকে কঠোর পরিণতির হুমকি দিয়েছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজা যুদ্ধ এড়ানোর চেষ্টা করলেও ইসরাইলকে নিরবচ্ছিন্ন অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছেন। ইরানকে দমন করতে যুক্তরাষ্ট্র কূটনীতি এবং সামরিক পদক্ষেপ একসঙ্গে পরিচালনা করছে।
এছাড়া, লেবাননের হিজবুল্লাহ দাবি করেছে, ইসরাইলি পদাতিক বাহিনী দক্ষিণ লেবাননে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের প্রতিহত করা হয়। সংঘর্ষের পর ইসরাইলি বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।