কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় সফর সংক্ষিপ্ত করে বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকালে দেশে ফিরেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সৌদি আরব সফর শেষ না করেই তিনি তড়িঘড়ি দিল্লিতে ফিরে আসেন এবং নেমেই কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে এক জরুরি বৈঠকে বসেন। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করসহ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার রাতে সৌদি রাজা আয়োজিত ভোজসভায় অংশ না নিয়েই মোদি নয়াদিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি লেখেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সৌদি সফর শেষে ভারতে ফেরার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন।”
প্রধানমন্ত্রীর পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী তার দিল্লি ফেরার কথা ছিল বুধবার রাতের দিকে। কিন্তু পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার খবর পাওয়ার পর পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সৌদি সফর সংক্ষিপ্ত করেন। খবর পাওয়ার পরপরই তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোন করে কাশ্মীরের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেন এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে শাহকে কাশ্মীরে গিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পর মঙ্গলবার রাতেই অমিত শাহ শ্রীনগরে পৌঁছে সেনাবাহিনী, আধাসামরিক বাহিনী, পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
মঙ্গলবার সকালে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের আমন্ত্রণে মোদি জেদ্দায় পৌঁছান। কিন্তু অনন্তনাগ জেলার পর্যটন এলাকা পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় বন্দুকধারীদের গুলিতে অন্তত ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর খবর জানার পরপরই তার সফর সংক্ষিপ্ত করে দ্রুত দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
সৌদি আরবে অবস্থানকালে সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী মোদি লেখেন, “কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। কেন্দ্রীয় সরকার তাদের পাশে রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই ঘৃণ্য সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনাকারীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের উদ্দেশ্য কখনোই সফল হবে না। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াই আরও জোরদার হবে।”
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর এই ভয়াবহ হামলা চালায় সশস্ত্র বন্দুকধারীরা। নিহতদের মধ্যে দুজন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এই হামলাকে ২০১৯ সালের পুলওয়ামা ঘটনার পর কাশ্মীরের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।