ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘অপারেশন সিন্দুর’ এখনও শেষ হয়নি, এটি কেবলমাত্র স্থগিত রাখা হয়েছে। সোমবার (১২ মে) জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে মঙ্গলবার (১৩ মে) এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ হামলার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানে চালানো ‘অপারেশন সিন্দুর’ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
তিনি বলেন, “পাকিস্তানকে জানা উচিত, আমাদের অভিযান এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। শুধুমাত্র পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি আসার পরই এই অভিযান সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।”
মোদি আরও বলেন, “আমরা ভবিষ্যতে পাকিস্তানের প্রতিটি আচরণকে এই মানদণ্ডে পরিমাপ করব— তারা সত্যিই সন্ত্রাস দমনে আন্তরিক কিনা। যদি তারা পিছিয়ে যায় কিংবা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে, তাহলে পরিষ্কার করে বলছি, প্রতিশোধমূলক অভিযান আবারও শুরু হতে পারে।”
২২ মিনিটের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদি জানান, ভারতের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পাকিস্তানের চিন্তার বাইরেই ছিল।
তিনি বলেন, “ভারতের নিখুঁত আঘাতে শুধু পাকিস্তানের সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস হয়নি, বরং তাদের মনোবলও চূর্ণ হয়েছে।”
ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডিতে (যেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর অবস্থিত) হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মোদি বলেন, “‘অপারেশন সিন্দুর’ শুধুই একটি সামরিক অভিযান নয়, এটি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থানের একটি কৌশলগত রূপান্তর।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এখন থেকে ‘অপারেশন সিন্দুর’ হবে ভারতের নতুন কৌশলগত নীতি। যেখানেই সন্ত্রাসের ঘাঁটি থাকবে, ভারত সেখানে হামলা চালাবে এবং ভারতের ওপর হামলা হলে তার জবাব দেওয়া হবে অত্যন্ত কঠোরভাবে।”
পাকিস্তানের ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল’ সম্পর্কেও তিনি কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, “এ ধরনের হুমকি ভারতের মনোবলে প্রভাব ফেলবে না। পারমাণবিক অস্ত্রের ছায়ায় যারা সন্ত্রাস চালায়, ভারত তাদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ও চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।”
মোদি স্পষ্টভাবে জানান, ভারত সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়া সরকার ও হামলার মূল পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করবে না— উভয়কেই একইভাবে প্রতিহত করা হবে।
উল্লেখ্য, ‘অপারেশন সিন্দুর’ চালানোর পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চার দিন ধরে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষ চলে। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় শনিবার যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে। এই যুদ্ধবিরতির দুই দিন পর, সোমবার (১২ মে), প্রধানমন্ত্রী মোদি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন।