ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রতিবেশী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ভারত। এই প্রেক্ষাপটে নয়াদিল্লি একের পর এক কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে।
বুধবার ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (NSC) এক জরুরি বৈঠকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—ভারত-পাকিস্তান স্থলসীমান্ত বন্ধ, সিন্ধু নদীর পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত, সার্ক ভিসা বাতিল এবং আরও কিছু কূটনৈতিক ব্যবস্থা।
এর ধারাবাহিকতায়, বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভারতের সব ধরনের ভিসা সেবা স্থগিত করা হয়েছে। এমনকি ইতোমধ্যে যাদের কাছে বৈধ ভারতীয় ভিসা রয়েছে, সেইসব ভিসাও আগামী রোববার থেকে বাতিল বলে গণ্য হবে। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানি নাগরিকদেরকে ভারত ত্যাগ করতে ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে কোনো পাকিস্তানি নাগরিক এখন থেকে ভারতের জন্য নতুন ভিসার আবেদন করতে পারবে না।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নেওয়া পাঁচটি বড় সিদ্ধান্তের বিস্তারিত হলো—
প্রথম সিদ্ধান্ত: সিন্ধু নদীর পানি বণ্টন চুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। ফলে পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত পানি সরবরাহ আপাতত বন্ধ থাকবে।
দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত: ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের সঙ্গে পাকিস্তানের আটারি-ওয়াঘা স্থলসীমান্ত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই সীমান্ত দিয়ে যারা ভারতে প্রবেশ করেছে, তাদের আগামী ১ মে’র মধ্যে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।
তৃতীয় সিদ্ধান্ত: দিল্লিতে পাকিস্তানের হাইকমিশনে কর্মরত সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর উপদেষ্টাদের অবাঞ্ছিত ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা দিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। একইসঙ্গে, ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তাদেরও দেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি।
চতুর্থ সিদ্ধান্ত: পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত চৌকিগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হবে এবং সার্ক ভিসা বাতিল করা হয়েছে। ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চম সিদ্ধান্ত: ভারত ও পাকিস্তানের হাইকমিশনগুলোতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে আনা হবে।
এইসব পদক্ষেপের মাধ্যমে ভারত পাকিস্তানের প্রতি তার কড়া অবস্থান স্পষ্ট করে তুলেছে।