জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে মালয়েশিয়ায় তার নির্ধারিত সরকারি সফর বাতিল করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহীম।
এক বিবৃতিতে আনোয়ার ইব্রাহীম বলেন, ভারতশাসিত কাশ্মিরে সাম্প্রতিক হামলার জেরে যে সংকট তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে পাকিস্তানের পরিস্থিতির প্রতি আমি সম্পূর্ণ সহানুভূতি প্রকাশ করেছি। মালয়েশিয়া আশা করছে, এই উত্তেজনা দ্রুতই প্রশমিত হবে।
পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আগামী শুক্রবার (৯ মে) শেহবাজ শরিফের মালয়েশিয়া সফরে যাওয়ার কথা ছিল। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, রোববার রাতে উভয় দেশের কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনা হয় এবং সে সময় শেহবাজ শরিফ ভবিষ্যতে সুবিধাজনক সময়ে মালয়েশিয়া সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এদিকে, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যেই ইসলামাবাদে পৌঁছেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগছি, যিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।
পাক-অধিকৃত কাশ্মির সফরকালে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার জানান, চলমান সংকট নিয়ে পাকিস্তান তার মিত্র রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে এক বন্দুকধারীর হামলায় ২৫ জন ভারতীয় নাগরিক ও একজন নেপালি পর্যটক প্রাণ হারান। এই ঘটনার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক চরম উত্তেজনায় পরিণত হয়।
হামলার জেরে ভারতে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। দেশটির বিভিন্ন মহল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানায়। ভারত সরকার এরপর পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা ‘সিন্ধু নদ পানিবণ্টন চুক্তি’ বাতিল করে এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা ও অবস্থানের অনুমতিও বাতিল করে।
এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদও ঐতিহাসিক ‘সিমলা চুক্তি’ বাতিল ঘোষণা করে। পাশাপাশি, ভারতীয় পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ভারতীয় জলসীমায় পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজের চলাচল নিষিদ্ধ করে।
এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটেছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।