যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে নতুন একটি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছেন, যার মূল অংশ হিসেবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ৮০০ মাইল দীর্ঘ বাফার জোন গঠনের কথা বলা হয়েছে। এই বাফার জোন প্রতিষ্ঠা করবে ইউরোপীয় ও ব্রিটিশ সেনাবাহিনী।
রোববার (১০ নভেম্বর) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে। ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা না করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোকে অধিকতর দায়িত্ব নিতে হবে। তার মতে, শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করে এই সংঘাত সমাধান করা উচিত নয়।
পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রস্তাবিত বাফার জোন রাশিয়া ও ইউক্রেনের সেনাদের মধ্যকার সংঘর্ষ কমাতে এবং কূটনৈতিক সমঝোতার সুযোগ সৃষ্টি করতে সহায়ক হবে। ট্রাম্পের মতে, রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের যে এলাকা দখল করে রেখেছে, তা বাফার জোনের সীমানা হিসেবে বিবেচিত হবে। এছাড়া, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা অন্তত ২০ বছরের জন্য স্থগিত রাখতে হবে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনায় আরও বলা হয়েছে, এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করবে যেন রাশিয়া পুনরায় আক্রমণ করতে না পারে। তবে এই মিশনে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সেনা পাঠাবে না বা অর্থায়নও করবে না। ট্রাম্পের সহকারী ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সহায়তা দেবে, কিন্তু মূল দায়িত্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর হবে।”
এই পরিকল্পনা নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আপত্তি তুলেছেন, তিনি একে রাশিয়াকে তুষ্ট করার প্রচেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং বলেন, “এটি ইউরোপের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হতে পারে।” এদিকে ট্রাম্পের উপদেষ্টা ব্রায়ান লানজা মন্তব্য করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চল পুনরুদ্ধারের চেয়ে শান্তি স্থাপনের দিকে মনোযোগ দেয়া।
অন্যদিকে, বাইডেন প্রশাসন ও ন্যাটো ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও অধিকৃত অঞ্চলগুলোর পুনরুদ্ধারে অটল রয়েছে, তবে ট্রাম্পের উপদেষ্টারা পরিস্থিতির বাস্তব দিক বিবেচনায় আপসের প্রস্তাব করছেন। এখন দেখার বিষয়, এই সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানে কোন প্রক্রিয়াটি কার্যকর হয়।