নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন যে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ রাশিয়ার সমর্থন হারিয়ে তার দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। তিনি রবিবার (৮ ডিসেম্বর) তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে বলেন, “আসাদ চলে গেছেন, এবং তার রক্ষক, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আর তাকে রক্ষা করতে আগ্রহী ছিল না।” এই তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
এদিকে, আসাদ সরকারের পতনের পর হোয়াইট হাউস একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, “প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং তার দল সিরিয়ার ঘটনাবলির ওপর গভীর নজর রাখছেন এবং আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ বজায় রেখেছেন।”
আর সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি বলেছেন, জনগণের নির্বাচিত যেকোনো নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে তিনি প্রস্তুত। তিনি জানান, তার বাড়ি ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা নেই এবং তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সচল রাখতে কাজ করবেন। বিদ্রোহী দলের প্রধানও জানিয়েছেন, সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকবে।
গত মাসের শেষের দিকে সিরিয়ার পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তিত হতে শুরু করে। ২৭ নভেম্বর আলেপ্পো শহরে বিদ্রোহীদের আক্রমণ শুরু হয়, এবং ১ ডিসেম্বর কুর্দি যোদ্ধাদের দখলে থাকা কিছু এলাকা ছাড়া বাকি অংশ বিদ্রোহীরা দখল করে নেয়। পরবর্তীতে, ৫ ডিসেম্বর হামা শহর দখল করে বিদ্রোহীরা। ৭ ডিসেম্বর দামেস্কে অভিযান শুরু হয় এবং ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর হোমসের দখল ঘোষণা করা হয়।
সিরিয়ার সশস্ত্র বিদ্রোহীরা বলছে, “আসাদ শাসনের অবসান সিরিয়ার ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।” তারা জানিয়েছে, “বাথিস্ট শাসনের ৫০ বছরের নিপীড়ন এবং দীর্ঘ সংগ্রামের পর আমরা আজ ৮ ডিসেম্বর অন্ধকার যুগের সমাপ্তি ঘোষণা করছি এবং একটি নতুন যুগের সূচনা করছি।”
বিদ্রোহীরা ঘোষণা করেছে, “নতুন সিরিয়া হবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের স্থান, যেখানে ন্যায়বিচার জয়ী হবে এবং সকল সিরিয়ানের মর্যাদা রক্ষা করা হবে।” তারা আরও জানিয়েছে, “আমরা অতীতের পাতা উল্টে ভবিষ্যতের জন্য নতুন দিগন্ত খুলতে যাচ্ছি।”
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএস-এর প্রধান আল-জুলানিসহ বিরোধী নেতারা বলেছেন, তারা ধর্মীয় সহিষ্ণুতা এবং আল-কায়েদার সাথে পূর্ববর্তী সম্পর্কের উদ্বেগ দূর করতে চান এবং সব সিরিয়ানের জন্য একটি সমান রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ দামেস্কের কেন্দ্রীয় এলাকায় জড়ো হয়ে “স্বাধীনতা” স্লোগান দিতে শুরু করেছে।