শিরোনাম

পশ্চিমবঙ্গে ওয়াকফ আইন নিয়ে বিক্ষোভে সহিংসতা, ইন্টারনেট বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ মাস আগে
ছবি : সংগৃহীত

সম্প্রতি ভারতে পাস হওয়া ওয়াকফ সংশোধনী আইনকে ঘিরে দেশজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ রূপ নেয় সহিংসতায়। বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে জেলার সুতি থানার অন্তর্গত অজগরপাড়ায় বিক্ষোভকারীরা জাতীয় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা অবরোধ সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ করলে বিক্ষোভকারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে, পুলিশ পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

এর আগে মঙ্গলবার জেলার রঘুনাথপুর এলাকায়ও একই ধরনের সহিংসতা ঘটে। ওইদিন পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং আবাসিক ভবন ও দোকানপাটে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন মুর্শিদাবাদের দুই থানা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে এবং ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বুধবার এক সভায় বলেন, “ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে সংখ্যালঘুদের উদ্বেগ আছে, আমি তা বুঝি। তবে বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি বরদাশত করা হবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমি আপনাদের পাশে আছি।”

এদিকে, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এক বিবৃতিতে বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করার যেকোনো চেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

অন্যদিকে, রাজ্যের মন্ত্রী ও মুসলিম নেতাদের একজন সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী পুলিশের বলপ্রয়োগের সমালোচনা করেছেন। জঙ্গিপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক জাকির হোসেন জানান, কিছু উগ্রপন্থী ব্যক্তি আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে, প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

বিজেপি এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মমতা ব্যানার্জীর বিরুদ্ধে আবারও ‘সংখ্যালঘু তোষণের’ অভিযোগ তোলে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওয়াকফ সংশোধনী বিলটিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর স্বাক্ষরের পর তা আইনে পরিণত হয়। এই আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে চারটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে এআইএমআইএম, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি ও আরজেডি-র মতো রাজনৈতিক দল এবং একটি নাগরিক অধিকার সংগঠনের পক্ষে করা আবেদনের নাম।

এছাড়া মণিপুর, গুজরাট, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক এবং কলকাতাসহ বিভিন্ন রাজ্যে এই আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড দেশজুড়ে এই আইন বাতিলের দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছে।