২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে ১১২ মিনিট পর্যন্ত আর্জেন্টিনার গোলপোস্ট নিশ্ছিদ্র রেখেছিলেন সার্জিও রোমেরো। তার আগে সেমিফাইনালে ডাচদের টাইব্রেকারে রুখে দিয়ে নায়ক বনে গিয়েছিলেন এই গোলরক্ষক। সেবার জার্মানির বিপক্ষে ফাইনালে জাল অক্ষত রাখতে পারলে হয়তো ৮ বছর আগেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে পারত আলবিসেলেস্তেরা।
দুর্ভাগা সার্জিও রোমেরো সেদিন সফল হলে হয়তো আজ তার নামটা আরও বেশি করে আলোচিত হতো। তবে সেই ইতিহাস ভুলে এবার নতুন রূপে আর্জেন্টিনা দলে ফিরতে যাচ্ছেন সার্জিও রোমেরো!
২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার গোলপোস্ট সামলানো সার্জিও রোমেরো দীর্ঘদিন ধরেই জাতীয় দলের বাইরে। ২০১৮ বিশ্বকাপের আগে কনুইয়ের ইনজুরিতে পড়ে দল থেকে ছিটকে গেলেন, আর ফিরতেই পারলেন না। এর মধ্যে আর্জেন্টিনা ৩৬ বছরের খরা কাটিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল।
বয়স হয়ে গেছে ৩৭, তারপরও জাতীয় দলে ফেরার আশা বাদ দিচ্ছেন না রোমেরো। আর্জেন্টাইন ক্লাব বোকা জুনিয়র্সে খেলা এই গোলরক্ষক নিজেকে সেরা অবস্থানে নিয়ে গিয়ে ফের জাতীয় দলে ফিরতে কাজ করে যাচ্ছেন।
২০২২ সালে বোকা জুনিয়র্সে যোগ দেয়ার পর নিজেকে দলের এক নম্বর গোলরক্ষক বানিয়েছেন রোমেরো। ইউরোপের দীর্ঘ ক্যারিয়ার শেষে বোকা জুনিয়র্সে যোগ দেওয়া রোমেরো বোলাভিপকে এক সাক্ষাৎকারে জানান, আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে ফেরার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।
তিনি বলেন, “আমি এই ৩৭ বছর বয়সেও এটার (জাতীয় দলে ফেরার) ব্যাপারে ভাবছি। আমি স্বপ্ন দেখি এবং আমার সেরাটা দিয়ে অনুশীলন করি, যাতে বোকা (জুনিয়র্স) ভালো করে এবং আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে ফিরতে পারি।”
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক এই গোলরক্ষক আলবিসেলেস্তেদের প্রতি তার আবেগের কথা প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, “আমি সবসময় কই কথা বলে আসছি: এটাই সেই জায়গা যেটাকে আমার ঘর মনে হয়। এটা সেই জায়গা যেখানে আমি থাকতে চেয়েছি কারণ আমি এই সব মানুষকে চিনি যারা আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের চারপাশে আছে এবং তাদের সঙ্গে আমার দারুণ সম্পর্ক, তাদের সবার সঙ্গেই আমার সময় কেটেছে এবং আমার মনে হয়, তারা আমার পরিবারেরই অংশ। আমি অনুভব করি, আমি তাদের সঙ্গে থাকতে চাই, এই যাত্রায় তাদের সঙ্গী হতে চাই, যতদিন না অবসর নিচ্ছি।”
২০১৪ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার এক নম্বর গোলরক্ষক হিসেবে গোলপোস্ট সামলান রোমেরো। ফরাসি ক্লাব মোনাকোর হয়ে পর্যাপ্ত ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেলেও তার ওপর ভরসা রেখেছিলেন তৎকালীন কোচ আলেসান্দ্রো সাবেয়া। সেই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টাইব্রেকারে দুটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনাকে জয় এনে দেন তিনি। সেই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি আর্জেন্টিনার জার্সিতে কোপা আমেরিকার আসরেও খেলেছেন।
এদিকে, ইনজুরি কাটিয়ে কোপা আমেরিকার অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন লিওনেল মেসি। আগামী ২০ জুন শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টের আগে তার সঙ্গে ইন্টার মায়ামির ট্রেনিং গ্রাউন্ডে প্রথম অনুশীলন সেরেছেন বাকি সতীর্থরাও। এর আগে সবশেষ দুই ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে খেলতে পারেননি মেসি। হ্যামস্ট্রিং চোটের কারণে ছিলেন দলের বাইরে। যদিও দুটি ম্যাচেই দল জয়লাভ করে। এল সালভাদরের বিপক্ষে ৩-০ ও কোস্টারিকার বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধানে জয়লাভ করে আলবিসেলেস্তেরা।
চোট কাটিয়ে মেসির মাঠে ফেরায় স্বস্তিতে রয়েছেন কোচ লিওনেল স্কালোনি। তিনি বলেন, “আমার মতে, চোট কাটিয়ে সে (মেসি) মাঠে ফিরেছে এবং খেলার মধ্যে আছে, এটা ভালো দিক। এটাই গুরুত্বপূর্ণ।” কোপা আমেরিকার আগে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা। আগামী ৯ জুন ইকুয়েডরের মুখোমুখি হবে তারা। এরপর গুয়াতেমালার বিপক্ষে খেলবে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।