প্রশ্ন উঠেছে, এমন তিনজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি কেন একই হেলিকপ্টারে সফর করছিলেন? তাও আবার প্রায় পঞ্চাশ বছর পুরনো একটি হেলিকপ্টারে! নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অন্য হেলিকপ্টারগুলো ঠিকঠাক থাকলেও, কেন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হলো?
কেনই বা পাশের দেশ হলেও, প্রেসিডেন্টের বিদেশ সফর হেলিকপ্টারে করা যৌক্তিক?
এই ‘দুর্ঘটনায়’ ইরানের প্রেসিডেন্ট ছাড়াও আরও দু’জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের একজন হলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এবং অন্যজন সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম।
আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম দুইজনের থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন না, বরং ভবিষ্যতের প্রেক্ষাপটে তিনি প্রথম দুইজনের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন। তাকে ইরানের আগামীর সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দেখা হতো। বর্তমান সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির মৃত্যুর পর এই পদে আলী আলে-হাশেমের অধিষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
ইরানের ক্ষমতার কাঠামোয় সর্বোচ্চ নেতা শীর্ষে, তারপর প্রেসিডেন্ট, তৃতীয় স্থানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্রের অবস্থান এর পরেই। সেই হিসেবে ইরানের চার প্রধান ক্ষমতাধরের মধ্যে তিনজনই এই দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
ইরানের মতো আধুনিক এবং স্বনির্ভর একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থা এবং আবহাওয়া অধিদপ্তর কীভাবে এমন বিপজ্জনক রুট দিয়ে প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারকে চলাচলের অনুমতি দিলো?
ইসরাইল-ইরান বিরোধ বর্তমানে প্রকাশ্য। ইবরাহীম রাইসি হচ্ছেন একমাত্র ইরানী প্রেসিডেন্ট যার আমলে ইসরাইলে সরাসরি হামলা হয়েছে। এমন একজন প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তায় এত ফাঁকফোকর থাকা সত্যিই বিস্ময়কর।
এই ঘটনার অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা। হয়তো কখনো জানা যাবে না।
আমাদের ইরান সম্পর্কে আলাদা বক্তব্য আছে। সিরিয়া ও ইরাক নিয়ে তাদের নীতির প্রতি আমাদের স্পষ্ট বিরোধিতা রয়েছে। এসব দেশে তারা নির্মম ভূমিকা পালন করেছে এবং করছে। তবে একসাথে এত গুরুত্বপূর্ণ তিনজন নেতার মৃত্যু মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি বড় সতর্ক সংকেত।