শিরোনাম

টাইগারদের হারিয়ে সেমিফাইনালে আফগানিস্তান

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৫ মাস আগে

নানা নাটকীয়তা ও সমীকরণের ম্যাচে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠল আফগানিস্তান। এই জয়ের ফলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো আফগানিস্তান সেমিফাইনালে উঠতে সক্ষম হয়। আফগানিস্তান ১১৬ রানের লক্ষ্য করে ম্যাচটি জিতে। বাংলাদেশের জন্য এটি দুঃখজনক হয়েছে, যেখানে তাদের রান রেটে আফগান বোলারদের বিপক্ষে অনুশীলন করা হয়েছিল। প্রথম অভিশাপ হলো রশিদ খানের ভয়ানক অফারে, যা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জয় থেকে বাধা দিয়ে গেল। বিদায় নিল অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে।
যদিও বাংলাদেশ ৭৩ বলে ১১৬ রান করতে পারত, তবে সেমিফাইনালে উঠতে সমর্থ হতে। একাধিক প্রস্তুতি দেওয়া হয়েছিল এবং একটি জয় পেলে অস্ট্রেলিয়া এর জন্য লাভবান হতো। তারা রান রেটে এগিয়ে থেকে সেমিফাইনালে যেতে পারত।
মঙ্গলবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংস্টনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটের শেষ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান করে আফগানিস্তান। প্রথম উইকেটে ৮০ রানে আফগানিস্তান ভালো অবস্থানে ছিল। এরপর রিশাদ হোসেন এবং মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের বোলিং মোহরে তারা ১২ বলে ৯ রানের পরিণামে ৪ উইকেট হারায়। এরপরেও অনেক উইকেট পতনের কারণে আফগানিস্তান শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে বেশি করে কিছু পারত না। আফগানিস্তান ৫৫ বলে তিন চার আর একটি ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। একিবারের শেষ দিকে ব্যাটিং করে ১০ বলে তিন ছক্কায় ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন রশিদ খান। অতএব, ২৯ বলে ১৮ রান করেন ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান।
বাংলাদেশ দলের হাতে ৪ ওভারে ২৬ রানে ও ৩ উইকেটের লক্ষ্যে লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন ব্যাটসম্যানদের সাথে ব্যাহত হন। একটি উইকেট পেতে তাদের সঙ্গে জড়িয়ে গেলেন তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান। আফগানিস্তান তাদের ১১৫ রানের লক্ষ্য অর্জন করেছিল, কিন্তু বাংলাদেশের পারমিশ্রিত বোলারদের বিপক্ষে তাদের লক্ষ্যটি মোহরা ব্যক্তিত্বে চিহ্নিত হতে পারে। বাংলাদেশের জন্য সেমিফাইনালে উঠার গণনা হচ্ছে যে, যদি তারা ১২.১ ওভারে বা ১২.৫ ওভারে ১১৬ রানে জয় পায়, তাহলে সরাসরি সেমিফাইনালে অগ্রসর হতে পারে। অথবা তাদের জন্য আরো একটি পথ হলো, যদি ১২.৩ ওভারে আফগানিস্তানকে ১১৯ রানে মোহরা ব্যক্তিত্বে শেষ করতে পারেন, তাদেরও সেমিফাইনালে যেতে সম্ভব। আর যদি আফগানিস্তান কোনো মতো জয় পায়, তাহলে তারা সেমিফাইনালে অগ্রসর হবেন। তবে বাংলাদেশ যদি জয় পায়, তাহলে সেমিফাইনালে অগ্রসর হবে তাদের দিকে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারিয়ে।
৭৩ বলে ১১৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামার আগেই ম্যাচে বৃষ্টির আশঙ্কা শুরু হয়েছিল। বৃষ্টির কারণে আফগানিস্তানের ইনিংস শেষে বাংলাদেশ ব্যাটিং শুরু করতে অনুমতি পেল। ম্যাচের প্রথম ওভারে বাংলাদেশ প্রাথমিক অভিযানে ১৩ রান সংগ্রহ করে।

দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে ফজলহক ফারুকির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। তানজিদ হাসান তামিম হিসেবে নতুন ব্যাটসম্যান ব্যাটিং শুরু করেন এবং তারা বাউন্ডারি হাঁকার চেষ্টা করে। একটি বলে বাউন্ডারি হাঁকার চেষ্টায় ক্যাচ হয়ে ফেলেন ফিল্ডার।

নাভিন উল হকের করা তৃতীয় বলে শান্ত আউট হওয়ার পর ব্যাটিং শুরু করতেই সাকিব আল হাসান উইকেটের উপর ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেলেন। পরপর দুই বলে দুই উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশ অন্যতম হারিয়ে যায়।
৩.৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ৩১ রান। এরপর স্থানীয় সময় ১১.১৫ মিনিটে শুরু হয় বৃষ্টি। খেলা বন্ধ থাকে। ২৮ মিনিট পর ফের খেলা শুরু হয়। বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে ১০ বলে মাত্র ১০ রান করে সাজঘরে ফিরেন সৌম্য সরকার।
৬.৩ ওভারে সৌম্য যখন আউট হন বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন মাত্র ৪৮ রান। ৭৩ বলে ১১৬ রানের লক্ষ্য থাকায় রানের চাপ ক্রমেই বাড়ছিল। তাওহিদ হৃদয় ব্যাটিং শুরু করেন এবং সে ক্ষেত্রে একটি অসাধারণ চাপ ক্রমে ছিল। তাওহিদ প্রতিটি বলেই বাউন্ডারি হাঁকার চেষ্টা করেন এবং মাত্র ৯ বলে খেলে ১৪ রান করে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ হয়ে ফেলেন। এর মাধ্যমে তিনি অত্যন্ত ব্যর্থ হন। তাওহিদের আউট হওয়ার পর টিম ম্যানেজমেন্ট হতাশ হয়ে পড়ে। তারপরেও, তার এই যাত্রায় রান সংগ্রহের প্রত্যাশা ছিল তারমধ্যে খুশি করার জন্য তারা খুশি ছিলেন না।
দলের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রান পাননি সাবেক অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তিনি ৯ বলে মাত্র ৬ রান করে ফেলেন। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাটিং শুরু করেন রিশাদ হোসেন, কিন্তু সেই সময়েই তাকে আউট করে ফেলা হয়।
১১.৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৭ উইকেটে ৮২ রান। এই সময়ে বৃষ্টি শুরু হয়। খেলা বন্ধ হওয়ার পর ৭ মিনিট পর খেলা ফিরে সূচনা দেওয়া হয়। এর পরেই ম্যাচের দৈর্ঘ ১ ওভার কমে যায়। বাংলাদেশের নতুন লক্ষ্য হয় ১৯ ওভারে ১১৪ রান লক্ষ্য। এর মানে ছিল মাত্র ৬ বলে রান কমে যায়।
লিটন কুমার দাস ১১৪ বলে ১১৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করছিলেন। তার সঙ্গে যুক্ত হতে ১৪.২ ওভারে দলীয় ৯২ রান ফেলেন পেস বোলার তানজিম হাসান সাকিব। লিটন কুমার দাস ব্যাটিং করার সময় তিনি ৪১ বলে ৫টি চার আর একটি ছক্কা ফিরেন। এরপর লেজের ব্যাটসম্যানরা সঙ্গত দিতে না পেরে বাংলাদেশকে জয়ের সুযোগ অধিগ্রহণ করতে পারেননি।

  • আফগানিস্তান নিউজিল্যান্ড
  • ঊষারবাণী
  • টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্বকাপ
  •