এমবাপ্পে পিএসজিকে বিদায় বলে স্বপ্নের ক্লাব রিয়ালে যোগ দিয়েছেন। ফ্রাঞ্চের অসাধারণ ফুটবলার এমবাপ্প, যার অপেক্ষা ছিল বেশ কয়েকটি কঠিন চ্যালেঞ্জের। দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষার পর সত্যি এবারের অবসান। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে প্রায় ৮০ হাজার দর্শকের সামনে কিলিয়ান এমবাপ্প রিয়াল মাদ্রিদের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। স্প্যানিশ ক্লাবটির প্রতি এমবাপ্পের ভালবাসা সে শৈশবের প্রতি যেটি নয়। এক যুগ আগে জিদানের ডাকে এই ক্লাবে ট্রেনিং করতে এসেছিলেন তিনি এবং আজ এলেন এই ক্লাবের খেলোয়াড় হিসেবে। তাই এবার রিয়ালে যোগ দিয়েও এমবাপ্প ছুড়ে দিলেন কিছু চ্যালেঞ্জের মধ্যে।
পর্তুগিজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এখন তার আউডল। ১২ বছর আগে জিদানের ডাকে এসেছিলেন এই শহরে, তখন নিজের আইডলের সঙ্গে তুলেছিলেন ছবি, জিদানের গাড়িতে ঘুরেছিলেন। এক যুগ আগে আর এখন, সময়ের অতিরিক্ত পার্থক্য। তার শৈশবের ভালবাসার ক্লাব, সেই ক্লাবেই তিনি খেলবেন!
দীর্ঘদিন পাস করেছেন নিজ দেশের ক্লাব পিএসজিতে। রিয়ালে যাওয়ার সংবাদ সেইটা অনেক আগেরই। অনেক সময়ের পর টানাপড়ে রিয়ালের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে এমবাপ্পের। এবার (১৬ জুলাই) সান্তিয়াগো বার্নাবে এলেন রিয়ালের খেলোয়াড় হিসেবে। হাজার হাজার অনুগামী শ্লোগান দিয়ে বরণ করে নিলেন এই ফরাসি তারকাকে। টানেল দিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে যখন তিনি, তখন সম্মুখভাবে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছিলেন পুরো মাঠে।
আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর এমবাপ্পে বলেন, “আমি একটু স্প্যানিশে বলার চেষ্টা করছি। আমি অনেক রাত এই স্বপ্ন দেখেছি। আজ সেটা সত্যি হলো। আমি খুবই খুশি। রিয়াল প্রেসিডেন্ট ও যারা আমাকে এখানে নিয়ে আসার জন্য কাজ করেছেন, সবাইকে ধন্যবাদ। আমার আসার প্রক্রিয়া কঠিন ছিল, কিন্তু আমি এখন রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়। আমার পরিবারও অনেক খুশি।
কথা শেষ করতে না করতেই সমর্থকদের গর্জনে কেঁপে উঠলো পুরো গ্যালারি। সমর্থকদের গর্জনে ভেসে এলো একটা ধর্মপ্রাণ কথা, “ব্যাজে চুম্বন করো।” তাৎক্ষণিক রিয়ালের ব্যাজ আকঁড়ে ধরে এমবাপ্পের চুম্বন হয়। এরপর সমর্থকদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেলেন। তারপর আবার বলা শুরু করলেন তিনি।
এমবাপ্পে আরও বলেন, “আমি শিশুদের বলতে চাই, আমি তোমাদের মতোই ছিলাম এক সময়। স্বপ্ন ছিল তোমাদের মতোই, আমার আজ স্বপ্নকে সত্যি করতে পেরেছি। তোমাদের জন্য আমার একটাই উপদেশ, আবেগ, ধৈর্য্য এবং স্বপ্ন দেখে যাওয়া এগুলোই, যা তুমি অর্জন করতে চাও। আজ আমি এখানে, সামনে তোমাদের মধ্যে কেউ এখানে থাকবে।”
১৫টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জিতেছেন রিয়াল মাদ্রিদ। সেই ট্রফির সাথেও ছবি তুলেছেন এমবাপ্পে। ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন তিনি, পিএসজির হয়ে লিগ ওয়ানের শিরোপাও জিতেছেন, তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখনও জিততে পারেননি তিনি। তবে এসব নিয়ে কোনও কথা বলেননি এমবাপ্পে।
এমবাপ্পে আরও বলেন, আমি খুবই শিহরিত। স্বপ্নের ক্লাব ও ইতিহাসের সেরা ফুটবল ক্লাবে আসতে পেরে আমি সত্যিই আনন্দিত। বেশি কিছু বলতে চাই না এর থেকে । বলতে গেলে আমি কেঁদে ফেলবো।
ক্লাবটির রীতি অনুযায়ী দর্শকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার আগে ক্লাব সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ সান্তিয়াগো বার্নাব্যু ঘুরে দেখান এমবাপ্পেকে। বার্নাব্যুতে মাদ্রিদের ট্রফি কেবিনেটের সামনে এমবাপ্পের হাতে জার্সি তুলে দেন পেরেজ। তবে রিয়ালের হয়ে ৯ নম্বর জার্সি পড়ে খেলবেন এই ফরাসি।
এমবাপ্পের আদর্শ খোলোয়াড় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তবে তার ৭ নম্বর জার্সিটি আছে ভিনিসিয়াসের দখলে। যার জন্য নাম্বার সেভেন জার্সি পাচ্ছেন না এমবাপ্পে। তাকে খেলতে হবে ৯ নম্বর জার্সি পরেই। এরই মধ্যে রিয়ালের অফিসিয়াল স্টোরগুলোতে তার জার্সি কেনার ধুম পড়ে গেছে।
No tags found for this post.